কবি রাজীব দে রায়-এর দুটি কবিতা
১)
ধান বোঝাই নৌকায় জননীযন্ত্রনা
খইয়ের ভিতর মায়েদের বিলাপ
বীজক্ষেত্র থেকে বহুদূরে পাড়ি দিতে হবে
ধূ-ধূ মাঠের দিকে তাকিয়ে আড়চোখে
গর্ভবতীরা নুয়ে গেছে ঝুমকোলতার মত
যে সব ধানের শিস হেমন্ত বাতাসে দুলে
ক্লান্তিহীন নেচে উঠত, তারা জেনে গেছে
যেতে হবে দেশ-দেশান্তরে,
ধানকলে জন্ম নেবে হাজারো ধান
নাড়ি কেটে কে কোথায় হারিয়ে যাবে...
নৌকার ভিতর সোনালি আর্তস্বর
প্রসবযন্ত্রনা উড়ে যায় দূর-দূরান্তে ।
২)
বহুদিন হয়ে গেল শহরে যাইনি,
কুড়িয়ে-বাড়িয়ে নির্মান করেছি নির্লোভ স্মৃতিমাদল,
অজ্ঞাতবাসের দিনগুলোয় কর্কশ পাখিদের
নখের আঁচড়ে বিক্ষত হয়েছে পাথুরে আয়না ...
শরীরে আঁকশির চোরাটান এড়িয়ে
বিপজ্জনক খাদের ধারে এসে দাঁড়িয়েছি,
শীত চলে গেছে, নিচে শুষ্ক নদীখাত
আদিম পাথরের স্রোতে পূর্ণ ...
কতক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে আছি ঠিক মনে নেই,
দূরে কোথাও কোকিল ডাকছিল,
শুনতে শুনতে সাড়হীন, নেমে গেল অভিমান,
এমন অসময়ে বৃষ্টিও নামতে পারে।
*****************************************************
ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ারে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। শিক্ষাগত যোগ্যতা- উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে M.A. পেশা- উচ্চ-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা। একাধিক লিটল ম্যাগাজিন,পত্র-পত্রিকা এবং বিভিন্ন ব্লগজিনে কবিতা ও গল্প প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে জলপাইগুড়ি শহরের স্থায়ী বাসিন্দা।
ভালো লাগল
উত্তরমুছুন