মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১

ইন্দ্রজিৎ নন্দী




কবি ইন্দ্রজিৎ নন্দী-র দুটি কবিতা 


তাঁতজীবন


শান্তিপুরীয় তাঁত-ঈশ্বর,

খটখট শব্দে বেঁধেছিল অভাবী সুতোর সংসার !


সুতো যেখানে শেষ হয়

শুরু হয় রোঁয়াওঠা গ্রামীণ বসতি,

শহর সুতো আর গ্রাম সুতোর মধ্যে তফাৎ একটাই

                    শহর সুতোয় যান্ত্রিক গিঁট,

                    গ্রাম সুতোয় লেগে থাকে হাত-সম্মতি ,ঈশ্বর-সম্মতি


সম্মতিও অভিভাবক প্রিয় !

গ্রাম থেকে দূরে কার্পাস-বাহিকা ব্যবসায়ীটিও

একসময় রাত বাড়লে ফেরে জারুলপাতা গ্রামে..


সেখানে মেষকালো কটন-ভ্যান এসে থামে !

খালাস করে যায় বিক্রি না হওয়া সমস্ত লাল নীল সুতো,

রাত জেগে চেয়ে থাকা রাস্তাটিও একসময় শহরসম্মত!

যেমন করে ময়লা বয়ে নিয়ে যায় অসীম কর্পোরেশন,

                বদলে যাওয়া টেরিলন দুঃখ জানে সুতোমন পোস্টমডার্ন ...



টেরাকোটা


মুখের বাঁদিকে যত্নে আঁকা স্মৃতির চন্দন,

হাতে হাত - আবছা হয়ে আসা মেহেদীরং।

তোমার চুল বাঁধার পদ্ধতি বলে দেয় 

আমাদের সম্পর্কের ওঠা-নামার ধরণ !


সম্পর্ক যখন মেঘ-বৃষ্টি যাপন

কিংবা ডিঙাপাতা মন্থনের আবেগ ভরা ভরা...

ছোট্ট একটা হেয়ারক্লিপে জড়িয়ে রাখ জুঁইটান

সামনে  বকুলরঙা গোছানো চুল এলানো- যত্নকরা ।


ছাতিম সম্পর্ক যখন ডুমুরের ফুলের মতো

অগোছালো চুল- অবিন্যস্ত মরচে পড়া শাড়ি,

ছোট্ট এক রাবার ব্যান্ড দুঃখ জানে

তুমি মেঘ-সেফটিপিন আটকানো বর্ষাজলের নারী।


***********************************************************



ইন্দ্রজিৎ নন্দী

জন্ম ১৯৯৮ সালে হুগলির আরামবাগে । প্রথম আত্মপ্রকাশ আরামবাগ টাইমস এরপর একে একে আঙ্গিক,আবহমান, শুধু বিঘে দুই, অপরজন, কলেজস্ট্রিট, লালমাটি প্রভৃতি পত্রপত্রিকায় লেখালিখি । লেখা যেনো এক ছায়াগাছ, যার নিচে অনায়াসে ছড়িয়ে বসা যায়।




1 টি মন্তব্য: