সম্পর্ক
বিরথ চন্দ্র মণ্ডল
গ্রাম থেকে শহরে আসার পথে এক বট গাছ । অসংখ্য ঝুরি নেমে গেছে চারপাশে। এই বট গাছের পাশ দিয়ে যে কেউ হেঁটে গেলে একটু বসতে হয় তাকে। এক মায়াবী টান গাছটার। প্রখর রোদ। গাছের পাতা একদম স্থির। কিন্তু এই বট গাছের গোড়ায় বসলে, হাওয়া গুলো কোথা থেকে যে আসে কে জানে !এক আশ্চর্য গুণ গাছটার। কেউ পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে ,কিংবা তার গোড়ায় বসলে, ডালপালা পাতা সমূহের উজ্জ্বলতা বেড়ে যায়। গাছটা গর্ব অনুভব করে মনে মনে।
তিয়াস মাঝে মাঝে আসে এই রাস্তায়। এলেই বসে এই গাছের গোড়ায় । সময় না থাকলেও বের করে নেয় দু' চার মিনিট । একটার পর একটা টিউশন সাজানো। বসার আর জো কোথায়? তবুও এখানে বসলে তার চিন্তাভাবনার শেকড় গুলো বটঝুরির মতো আস্তে আস্তে নামতে থাকে। এক মাদকতায় ভরে যায় ।
মাঝে মাঝে এই বটগাছ যেন নানা রকম অঙ্গ ভঙ্গিমায় তাকে নানা প্রশ্ন করে দেয় -- পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীর মধ্যে মানুষ ই বুদ্ধিমান এবং বুঝদার ।তবে সে ভুল করে কেন ?
তিয়াস উত্তর দেয় -- তার ব্যক্তিস্বার্থের জন্য - বুঝে ও না বুঝার ভান করে । তাই।
আবার প্রশ্ন করে --এই ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য অনেক ক্ষতি ও তো হয়ে যায় , তাহলে !
তিয়াস বলে --এ পর্যন্ত বুঝে ওঠার জায়গায় সে থাকে না। তাই ।
আর যখন বুঝতে পারে, ফিরে আসার কোন রাস্তায় থাকে না। এই ভাবে গাছের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উঠতে পারে না। আর , যা যা পারে না ,গ্রামের ভিকু দাদুর কাছে জেনে নেয়। দাঁড়িওলা ভিখু দাদুকে সিদ্ধ যোগীর মতো মনে হয়।ভীষণ কম কথা বলা মানুষ তিনি।
শহরে আসার আর এক রাস্তা হয়েছে ইদানিং। নতুন রাস্তা দিয়ে মানুষের চলাফেরা। স্বভাবতই লোকজন বটগাছের রাস্তার ধার ঘেঁষে না ।
তিয়াস সাইকেল ছুটায় । বট গাছের ধার দিয়ে। যেতে আসতে তাকায়। বটগাছের ক্রমশ ফ্যাকাশে দৃষ্টি । শরীরের ভাজে ভাঁজে তার তেজস্ক্রিয়তা ,চাক চিকনটা হারাচ্ছে ধীরে ধীরে। তিয়াস সাইকেল দাঁড় করায় । বসে। গাছ
মন খারাপের সুরে তিয়াসের উদ্দেশ্যে বলে -- এখন কেউ আর আমায় ভালোবাসে না। কেউ আসে না এখানে । শুধু তুমি ছাড়া। তিয়াস শুনে কথাগুলো । কোন উত্তর দিতে পারে না।
এর আগে বট গাছের অনেক কঠিন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে।
মানুষ ইদানিং বড় ব্যস্ত যে ।
ঘর আসে তিয়াস।
হাত মুখ ধুয়ে ছেলেটার কাছে বসে পড়ল।
সব স্কুলে দিয়েছে ছেলেটাকে। শিশু শ্রেণী হলে কি হবে? অনেক পড়াশোনার বোঝা এই শিশুটারও। ছেলেটিকে একটু ঝুমুতে দেখে, বকুনির সুরে ধমক দেয় তিয়াস। ছেলেটা কেঁদে ফেলল চিৎকার করে ।
রনিতা ছুটে আসে। --তুমি কি ছেলেকে মারলে ? বলে কোলে তুলে নিল।
--আধা ঘন্টা দাও , আমি দেখিয়ে দিই একটুকু।
---না না ঢের হয়েছে !তোমাকে আর মাস্টারি করতে হবে না । এসেই তো কাঁদিয়ে দিলে।গলায় ঝাঁজ রনিতার। --আমি কি শুধু কাঁদাই ! তাছাড়া এমন করলে তো ছেলেটা লাই পেয়ে যাবে ! কাউকে মানবে না ।
এইভাবে এক কথায় লেগে গেল।
তিয়াসের শুধু টিউশনিতে ভালো ভাবে সংসার চলে না। রনিতা সাহায্য করে । এক বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করে সে। মাইনেও বেশি। কিন্তু ; এই যে , কিছুই বোঝে না । হঠাৎ কিছু মানেও নিতে চায় না। যা বুঝে তাই করে। এই নিয়ে প্রবল অশান্তি ।
এই সেদিন পকেট হাতড়ে কয়েকটা ফোন নাম্বার নিয়ে সে কি উল্টোপাল্টা প্রশ্ন !
এটা কার ফোন নাম্বার !
এ এই কবিতা আবার কাকে নিয়ে লেখা !
সবসময় এমনটা ভালো লাগে না তিয়াসের।
প্রশ্ন জাগে - সত্যিই কি রনিতা ভালোবাসে ?
নাকি বেকার টিউশনি করা এক পাগলকে বিয়ে করে হাঁপিয়ে উঠেছে !
এই কারণে কি দিন দিন অশান্তি !
বুঝে উঠতে পারে না তিয়াস। সন্ধ্যে কিংবা রাত্রি হলেও বট গাছ টায় গিয়ে বসে।
এখানে এলে যেন কিছুটা শান্তি। এই বট গাছটাই তাকে বোঝে । অনেক কিছু শেয়ার করে দুজন । কথায় কথায় রনিতা সেদিন মিউচুয়াল ডিভোর্স চেয়ে বসল। বট গাছের কাছে জানতে চাইল তিয়াস ।
বটগাছ বলল -- তোমাকে একটু বাজে নিতে চাই হয়তো।
তিয়াস বলে -- যদি তাই হয় ; ও তো মোটা টাকা মাইনে পায়।
ও ১০০ টাকা দিলে, খরচের পাই টু পাই হিসাব দিই। তবুও তাতে সন্তুষ্ট হয় না
পরন্ত, ও দু' হাতে টাকা ওড়ায়।
কোন হিসাব রাখে না।
আমি ওসবে কিছু মনে রাখি না । মনে রাখার প্রয়োজনও মনে করি না ।
বটগাছ হেসে উত্তর দেয় -- আসলে বন্ধু , মেয়েরা এরকমই হয় ।
এ নিয়ে মাথা ঘামিও না। তিয়াস চুপ করে বাধ্য ছেলের মত বটগাছের সব কথা শুনে।
সে নিজেও মনে মনে ভাবে -- রনিতা বোধ হয় আমাকে ঠিকমতো বুঝে উঠতে পারছে না। তাকে আরো বেশি করে ভালবাসতে হবে । সংসারের উন্নতির জন্য দুজনকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে ।এর জন্য দূরের পালাতে ও কোন দোষ নেই।
ঠিক করল সে কলকাতা যাবে।
কলকাতায় কোম্পানির কাজে যোগ দিলো তিয়াস। কিন্তু দূরে গিয়েও বেশি দিন থাকতে পারে না।
বারবার ছুটে আসে ,সন্তানের জন্য ,রনিতার জন্য ।
মন পাগল পাগল মনে হয়।
ঝড় ,বর্ষা ,বাস ধর্মঘট , কোন কিছু পরোয়া করে না তিয়াস। মনটা পাগলপারা হলে ,ছুটে আছে রনিতার কাছে ।
ট্রেনে দু ' একটা জিনিস...সিজিনের ফলমূল কিনলে, রনিতা ওসবে হাত দেয় না । তিয়াস অনেক পিপাসা নিয়ে ছুটে আসে। রনিতার কাছে কোন সাড়া পায় না।
মনে অনেক ভাবে ,-বোধ হয় কলকাতা যাওয়ার সায় দিলেও ,হয়তো মন থেকে মেনে নিতে পারেনি রনিতা ....
এই ভেবে কলকাতা ছাড়লো সে ।
টিউশনগুলো সব হাতছাড়া।
কলকাতা থেকে হোলসেলে মাল কিনে রিটেলে বেচতে শুরু করল।
মুনাফা ও দেখল কিছুটা।
রণিতার নিজের অফিস, বাড়ির কাজকর্ম , ছেলের পড়াশোনা ,এতকাজ একা সামলাতে পারেনা ।
এক কাজের মেয়ে আসে। ঘর মোছা ,রান্না-বান্না ছেড়ে চলে যায়।তিয়াসকে তাড়াতাড়ি বের হতে হয় ।
অনেক দোকানপাট ধরা। সবাইকে সঠিক সময়ে মাল ডেলিভারি না দিলে ব্যবসার ক্ষতি ।
সকালে বালতি নিয়ে বাথরুমে ঢোকার মুখে সজোরে আছাড় খেলো তিয়াস ।
কাজের মেয়েটা সামনে ছিল। মেয়েটা হেসে উঠলো হি হি করে ।
কোমরে বেশ লেগেছে। কাজের মেয়ের সামনে এমন হাসির ঘটনায় নিজের মান রক্ষার্থে সে ও হেসে ফেলল ফিক করে।
রনিতা ঘরের মধ্যে কিছু গোছ গাজ করছিল ।
এদের হাসি শুনে বেরিয়ে এসে, কিছু একটা আঁচ করলো,
তারপর ফোঁস করে উঠলো -- কিসের এত হাসাহাসি আঁয়..
তলে তলে এত । বলি -আমি এক আদ দিন সকালে না থাকলে , আরো কি না কি হয়!!রনিতারর মুখের কথা শুনে কাজের মেয়ের মুখ একেবারে শুকতো।
তিয়াস বুঝতে পারছে না , সে কি করবে!
বলল কি শুনলে, কি বুঝলে ?এমন বাজে রকম এণ্ডিকেট করছো ?
--আমি ঠিক ঠিক বুঝেছি ! ভেবেছো ডুবে ডুবে জল খেলে শিবের বাবা টের পাবে না!!!রনিতা চিৎকার করতে করতে ব্যাগ গোছাতে লাগলো ।
তিয়াস জানে , এই ব্যাগ গোছানো মানে ,হয় বাপের বাড়ি ।নয়তো মাসির বাড়ি।
ছেলেটাকে কোলে নিয়ে, গট গড করে বেরিয়ে গেল রনিতা, কাজের মেয়ে ততক্ষণে হাওয়া।
কি করবে বুঝতে পারছে না সে। যে কাজের যাবার জন্য এত তোড়- জোর । সব যেন ভুলে গেছে সে ।কিবা দেখল রনিতা ! মিছিমিছি একটা খারাপ কিছু সন্দেহ করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল।
তার আসা-যাওয়া , চলাফেরা, হাসিঠাট্টা, কোন কিছু ভালো চোখে দেখতে পারছে না রনিতা।
কিন্তু কেন ? ভালোবাসা থাকলে মনে মনে টান থাকলে তো - এত কিছু হওয়ার কথা নয়।
রনিতা তো এতকিছু ভুল করে। কই ;সে তো কিছু বলে না !
সেদিন মানত করে পুজো করা হলো বাড়িতে । রাতুলের নামে।
পুজোর যা যা করার তার বাবার বাড়ির লোক আর সে করলো। তিয়াস
শুধু অড়ারি খেটে গেল ।কোন প্রতিবাদ ছাড়া।
আত্মীয় - বন্ধু - বান্ধব, এদের নেমন্তন্ন রক্ষার্থে, উপহার কি হলো - কিছু জানতে পারেনা সে।
আবার উপহার সামগ্রী সে নিজে কিনলে রনিতার পছন্দ হয় না । সে যত দামি হোক। এভাবেই সে ব্রাত্য হয়ে দাঁড়িয়েছে দিন দিন ।
এতদিন শুধু এডজাস্টমেন্ট করে এই পর্যন্ত।
আজ যেন ক্লান্ত সে আর পারছে না তিয়াস।
এই অশান্তি মিটমাট হবার আশায় নিজেদের মধ্যে বিশেষ বয়োজ্যেষ্ঠ জনা কয়েক নিয়ে বসাও হয়েছে। তবু শান্তির কোন দিক খুঁজে পায়নি সে ।বরং বেড়েই চলেছে ।এইসব ভাবতে থাকে সে । ভাবতে ভাবতে সকাল গড়িয়ে দুপুর। দূপুর গড়িয়ে বিকেল । দিন দিন এই অশান্তি নিয়ে বেঁচে থাকার কোন মানে হয় না। তার কাছে কাছে অর্থহীন এসব।
শুধু ছেলেটাকে নিয়ে ভাবনা। সে জানে ,বাবা- মা'র মধ্যে সম্পর্কের এই জায়গায় , কোন সন্তান উপযুক্ত মানুষ হয় না। তিয়াস বেঁচে থাকলেও ছেলেকে মনের মত মানুষ করে তুলতে পারবে কিনা সন্দেহ তার ।
সুতরাং বেঁচে থেকে লাভ নেই।
কাছে একটা মোটা দড়ি পড়ে থাকতে দেখল তিয়াস। দড়িটা যেন কাছে টানছে থাকে। মাথাটা খুব ঘুরছে তার। বুকটা জ্বলে যাচ্ছে ।
কি থেকে কি হয়ে গেল !
শুধু একবার নয় ।
বার বার !
কি এমন পাপ করেছে সে! এজীবনে কোনদিন শান্তি নেই।
সারা জীবন শুধু কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকা।
শুধু দীর্ঘশ্বাস আর দীর্ঘশ্বাস ! সংসারের জন্য আর কি বা করতে পারে সে !
শুধু একটু ভালো থাকার জন্য কি না কি করে চলেছে ! অথচ কি চায় রনিতা? এখনো সে বুঝতে পারল না।
অথচ তাকে সে পাগলের মত ভালবাসে। অথচ একটা দিনের জন্য ও রনিতা তিয়াসকে কাছে টেনে নেয় নি । কাছে গেলে আজ ভালো লাগছে না বলে পাশ ফিরে শুয়েছে।
দিনের পর দিন একটাই কথা বুঝিয়ে এসেছে ---তিয়াসকে সে চায় না --চায় না --চায় না! দড়িটা হাতে নিয়ে সিলিং ফ্যান এর দিকে তাকালো সে। সত্যি তো!!!
মরে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ নেই তার!!!
একমাত্র বুঝতে পারত বট গাছ।
গতকাল গাছটার কাছে গিয়ে তার পিলে চমকানির মত অবস্থা ।তখন অনেক রাত্রি। কাজের থেকে ফেরার সময় গাছের নিচে পায়ে পায়ে মচমচ আওয়াজ।
এত শুকনো পাতা !
গাছটার উপর দিকে তাকিয়ে দেখেছিল -জোছনার অন্ধকারে পাথরের মূর্তির মত খায় দাঁড়িয়ে গাছটা।
বট গাছের সাথে নিজের তুলনা করে তিয়াস ।সে ওতো কত স্বপ্ন নিয়ে বড় হয়েছিল। কত সাধ, কত স্বপ্ন ,কত যত্ন করে মানুষের এই বেঁচে থাকা -- এই ভাবে জলাঞ্জলি হয়ে যায় !!!
না সময় নষ্ট করে না।আর। উঠে দাঁড়ালো সে ।
মরলেই তবে রনিতার শান্তি। তবেই প্রাণ খুলে হাসতে পারবে রনিতা।
তাহলে তার সন্তান !!!
তার আদরের সন্তান কি শুধু খেয়ে পরে বড় হবে!!
মানুষ কি সত্যি হতে পারবে..??
প্রশ্নটা করে উঠলো তিয়াসের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা অন্য কেউ ।
-না -সে তিয়াস নয়।
বুঝতে পারছে তার মন দুটো ভাগে ভাগ হয়ে গেছে।
মনে - মনে তিয়াস উত্তর দেয় --- মানুষ হবে হয়তো। কিন্তু শিক্ষিত হয়ে ক' ত জন বা আর মানুষ হচ্ছে ???
সুতরাং খেয়ে পডরে বড় হওয়াটাই বা কম কোথায়???
আচ্ছা আত্মহত্যা করলে কার লাভ ???
তিয়াসের না রনিতার ???
লাভ-ক্ষতির হিসাব জানে না সে। রনিতার কতটা লাভ হবে, সে কথা বলতে না পারলেও কারণে - অকারণে এই অশান্তি ও আর সহ্য করা যায় না । সে বুঝে গেছে।
ক্রমাগত মনের ভেতরে পক্ষে-বিপক্ষে এই যুক্তি-গ্রাহ্য সওয়াল হয়েই চলেছে।
দুটি খন্ডিত মনের মধ্যে এই যুদ্ধে ও চেতনে কিংবা অবচেতনে - সে জানেনা....দড়ির প্যাঁচ কোষের চলছে। এবং দৃষ্টি সেই সিলিং ফ্যানে বরাবর। নিচে তাকালো । পায়ের তলায় কখন সে চৌকি টেনে রেখেছে অন্যমনস্কতায় , বুঝে উঠতে পারছেন না ।
দেখল কখন দরজা বন্ধ করে দিয়েছে সে নিজে ও জানেনা। আজ তার কেউ নেই এ পৃথিবীতে । কেউ তাকে বোঝে না ।
সময় নষ্ট না করে গলায় দড়িটা পড়ে ফেলল সে। দেখল - ফ্যানে দড়িটা বাধা আছে। ছোট চৌকি পা দিয়ে ঠেলে ঝুলে যাওয়ার মুহূর্তেই - দরজায় ঠকঠক আওয়াজ। একটি নারী কন্ঠের আর্ত চিৎকার ।
চিৎকার বাড়ছে ।
দরজার আওয়াজ ক্রমশ দরজা ভাঙার উপক্রম।একটি শিশু বলে চলেছে ---
দলজা তুলো বাবা........
.দলজা তুলো বাবা.........
দলজা তুলো বাবা.........
****************************************************************************************************


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন