অমলেন্দু বিশ্বাস / দু'টি কবিতা
জ্যোৎস্না নই, মুক্তধারা
হুবহু জ্যোৎস্নার মতো মনে হতে ডাকলাম সান্ধ্যকালে
ত্বরিতে মোচড় দিয়ে খুব কাছে এসে বলল আমাকে --
'আমিতো জ্যোৎস্না নই, মুক্তধারা '!
তাহলে দৃষ্টিবিভ্রম হেতু শর্বরী কৌণিকে
মৃদু মৃদু নেমে এলো চোখের বারান্দা!
নতুন পাতার গন্ধ যেভাবে রবীন্দ্র গানে
অবিরল নাট্যধারা ছুঁয়ে যায় নন্দন প্রাংগনে।
সামান্য বিভ্রম থেকে, তবে টাল খেয়ে নড়ে উঠল ;
নিঃশ্চেতন ঘুম ছেড়ে আড়মোড়া ভাঙতে থাকল--
শব্দরাধা, অক্ষরসুবাসময়, পয়াররমনা।
এভাবে রম্যতা থাক আজ পলাশ ফাগের হৃদিশ্বাসে...
রানু- ভানু উপকথা
১
বয়স কোন ব্যবধান মানে না
কখনো রানু, কখনো ভানু দ্যাখো
পরস্পর থাকে লগ্নজাত।
সে সব বুঝে নিতে বিহানবেলা
পার করতে মধ্য সূর্য ছোঁয়া!
ছাতিমতলা সোনাঝুরির ক্যানভাসে
তোমাকে চিনে নিতে পলাশ রাখি --
গোপন হৃদে। যেখানে খোয়াই নির্জনতা
চেয়েছি দিতে অকপট নয়নতারা।
রানুর ভানু কিংবা ভানুর রানু
প্রত্নযোগে জাগর রবিশংকর
গুপ্ত ঝালা তুলে রাখা অন্নপূর্ণা!
গোলাপ পুষি আত্মহৃদে কবিতায়
শুধু পাঠোদ্ধারে খুশবু ঘোরে...
২
কোথায় প্রাচীর,দুর্গ ঘেরা থাকে!
যেখানে তোমার অবস্থান সীমা
অদৃশ্য সীমান্ততারে বাধা থাকে!
নির্বাক সন্ধ্যার কাছে নতজানু --
হাত পেতে এ' সামান্য চাওয়া ;
অমূলক নয়, একজন কবি
শুধু শুদ্ধহাতে খোঁজে আরাধ্যতা।
তবুও প্রাচীর দুর্গ ঘেরাটোপে
তোমার আকাংক্ষাগুলি কাতরতা --
মুখে, চেয়ে থাকে রাঙাধুলোপথে
অথচ তোমার পথ মিড়-বাওয়া
অদৃশ্য প্রাচীর ভাংগা মৃদংগ পবন...
******************************************************************************************************
কবি, প্রাবন্ধিক, বিনয় মজুমদার চর্চার বিশিষ্ট নাম। জন্ম: ১৯৫৯, শালকিয়া, হাওড়া। বাণিজ্য ও কলাবিভাগে স্নাতক। সরকারী চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত। ‘নৌকো’ পত্রিকার সম্পাদক, বিরাটিবাসী। এ যাবত্ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ১৪ টি। উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ: ‘ডুবুরী’ (সিলভান), ‘ ‘লক্ষ্মীর পা’ (এ মাসের কবিতা), ‘ ‘বিনম্র সনেটগুচ্ছ’ (নৌকো), নির্বাচিত কবিতা সমগ্র’ (ঈশপ)। দু-বাংলায় স্মারক সম্মান পেয়েছেন অনেক।



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন