অমিত চক্রবর্তী / দু'টি কবিতা
অসতর্ক আবার, সাহানায় সুর তুলে ফের
আমাদের অভিযান শেষ প্রায়, এই সেই অর্ধরুক্ষ পাথর
যা পাহারা দেয় দুর্গপরিখা অথবা দুর্গ সে নিজেই, জল এসে
আলগোছে ছোঁয় তার পায়ের আঙুল, চুমুতে ভেজানো
গোড়ালি, স্বর্ণলোম, হয়তো বা একটু বেশি ফর্সা সে
এ অঞ্চলে, মসৃণ, উদাসিনী একবার কাছে আসে,
উন্মনা ফোকাস তার চলে যাওয়া মাস্তুলে, পিছুহাঁটা ঢেউ,
ঢেউ না বালিয়াড়ি –
এই বিচে কিন্তু সাঁতরানো বারণ,
কারা যেন ডুবপাথরে ধাক্কা খেয়ে রক্তারক্তি করেছিল,
সেই থেকে আমি চোখ কান খোলা রাখি, সতর্ক হাতেতে
মুঠোফোন, আমি তাকে একবার থামাতে গেছিলাম,
থমকে দাঁড়াই কিন্তু, মুগ্ধ আলসে হয়তো, হয়তো বা
অসতর্ক আবার, সাহানায় সুর তুলে ফের –
এই যে শুনছেন, শুনুন,
শোনো …

রাত্রি যদি নিজেই এবার সকাল সেজে আসে
কী রয়ে যায়? আমি দেখেছি মানুষ ঘিরে রেখেছে
নিজেকে, দলকে, এক গাঢ় কোকুনে, শব্দভান্ডার
ছড়ানো ইতস্তত, অনীহার, উদাসীনতার খোলসে
আঁকা খাম, ঝলমলে ড্রাগ। সাতরঙা পুচ্ছ তাদের,
ছড়ানো পেখম। অতন্দ্রিলা দেখেছ, কেমন শব্দখেলা
মেলেছি আমি, প্রয়োগগুণে সুরেলা মায়াজাল
অথচ তালগোল আজন্ম, বিমর্ষ ভেতরে ভেতরে,
পুরোটা আবশ্যকহীন।
কী রয়ে যায়? আধন্যাড়া খেঁজুরগাছে আমি দেখেছি
কাকের সারি, ঝুলন্ত রসের ভাঁড় অথচ
নাগালের বাইরে খিদের। একাকী মগ্ন এখানে
সময় বা ইচ্ছে নেই প্রতিবাদে, খেলাখেলা ভাব।
দিবারাত্রি কাটুক আমার অহিতুন্ড অক্ষক্রীড়ায়।
কিন্তু রাত্রি যদি নিজেই এবার সকাল সেজে আসে?
অমিত চক্রবর্তীর জন্ম সোনারপুর অঞ্চলের কোদালিয়া গ্রামে। ছাত্রাবস্থায় অনেক লেখা এবং ছাপানো কলকাতার নানান পত্রপত্রিকায়। পড়াশোনার সূত্রে আমেরিকা আসা ১৯৮২। এখন ক্যানসাস স্টেট ইউনিভারসিটি তে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ও প্রাক্তন কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের ডিন । প্রকাশিত কবিতার বই দুটি - "অতসীর সংদারে এক সন্ধ্যাবেলা" (রা প্রকাশন ২০২১) ও "জলকে ছুঁয়ো না এখানে" (মিসিসিপির মেঘ প্রকাশন ২০২২)। দুটি পত্রিকার সহ সম্পাদক - উত্তর আমেরিকার নিউ জার্সি অঞ্চলের পত্রিকা "অভিব্যক্তি" এবং "উজ্জ্বল এক ঝাঁক পায়রা" কবিতা পত্রিকা।



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন