সৈয়দ কওসর জামাল / দু'টি কবিতা
অগ্নিস্নান
জ্বলছে সংসার
শোঁশোঁ শব্দে ছড়ায় আগুন চারিদিকে
দূর থেকে দেখি
কীভাবে নিঃশব্দে ধোঁয়া হয়ে উড়ে যাচ্ছে
আমাদের রান্নাঘর, স্নানগৃহ, দেওয়ালে হাতের স্পর্শ
ভালোবাসা ধোঁয়া হতে পারে না কখনও
সেসব গোপন থাকে হাতের মুদ্রায়,
কিংবা শাড়ির আঁচলে, পানের কৌটোয়
কী তাদের ভাষা, অভিব্যক্তি কীভাবে প্রকাশ করে
আমরা জানিনি, দেখেছি গৃহের মধ্যে মেঘপুঞ্জ
বৃষ্টিরা নেমেছে দেখি যখনতখন
কোথায় বৃষ্টিরা আজ! কে বাঁচাবে প্রলয় থেকে!
আকাশ বিমুখ দেখে মৃত্যুর ফড়েরা ঘোরে
এদিকওদিক
আগুনের হল্কা যত দেহে এসে লাগে
মোহপরিবৃত শরীরের ডানাগুলো খুলে খুলে যেতে চায়
ওদিকে নিষ্ঠুর সময়বিলাস জাগে
জাগে আগুনের কালো বিষ
পাতালপৃথিবী থেকে ছুটে আসে সাইলপ দৈত্যদের
বিস্ফোরক বজ্রের শলাকা
আমাদের মোহ নেই, ভ্রান্তি নেই, কপটতা নেই
আগ্নিস্নানে এ সংসার এইবার নব্য উপনিবেশের
আশ্রয়শিবির হয়ে উঠবে।
নশ্বর বাঁচাও চাই
এ সংসার নশ্বরতা ছেড়ে আকাশসাঁকোটি
পেরোতে চেয়েছি
ধাক্কা খেয়ে নীচে পড়ে যাই
আবার ওঠার চেষ্টা করি
বুঝে যাই পতনশীলতা রক্তে পেয়েছে প্রশ্রয়
এ সময় বিষণ্ণতা আমার আশ্রয়
আমি তাকে প্রতিপালনের কথা বলি
বলি দ্যাখো এই ভঙ্গুর শরীর উপশমহীন
যাকিছু বাঁচিয়ে রাখে তা হল মেধার প্রবঞ্চনা
এভাবেই ছোট্ট এ সংসার ভরে ওঠে
সন্দেহের সবুজ বাগানে, শস্যে, ফলে
হোঁচট খাওয়ার পর আজ পুনরায়
প্রবল অনিশ্চিতের গায়ে ঠেস দিয়ে আমি
ঘুমোতে চেয়েছি
টের পাই
শরীরের মধ্যে কোনো শরীর জেগেছে
খুলে গেছে স্নানঘর থেকে সহস্র জলের ধারা
প্রশান্ত রসের থেকে করুণ রসের উৎসমুখ
আমি বাঁচি হর্ষে ও বিষাদে
বাঁচি ও বাঁচিয়ে রাখি হোঁচটবিলাস
বাঁচিয়ে রেখেছি দেখি সংসারবিভ্রাট
ঘুম পায়, কঠিন শ্রমের মতো কবিতাও পায়
অনশ্বর কাব্যপুথি হাতে নশ্বর বাঁচাও চাই!
**************************************************************************************************************
***************************************************************************************************************



জামাল তুমি সর্বত্র । ভালো লাগছে ভীষণ ।
উত্তরমুছুনচমৎকার
উত্তরমুছুন