বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

জবা ভট্টাচার্য



জবা ভট্টাচার্য / দু'টি কবিতা

অবলম্বন


এসো, সাঁঝবাতির ঘরে  যাপনাকাঙ্ক্ষায়

একবার অন্ধকারে  আত্মা ছুঁয়ে দেখি।

 

আমার  গা জুড়ে ঘন হয়ে ওঠা কচুরিপানার গন্ধ

বুক বেয়ে গড়িয়ে আসা দুধ জল জ্যোৎস্না  বাতাস--

মিলেমিশে একাকার

মিহি সরের মত চাঁদের আলো

বিছানায় যাবজ্জীবন অন্তর্লীন--

তিস্তার  ভিজে বালিতে,মমতার রুদ্ধদ্বারে

অভিমান  যেখানে কড়া  নাড়ে

ঠিক  সেখানেই

আঁধার গাঙে টলমল ঢেউএর জীবন ছেড়ে

একটা বিষন্ন চলে যাওয়া--


সে গহন দহনকালে

দু চোখের বিলম্বিত আশাবরী অক্লেশে করেছি পান।


আয়ুরেখায় যতদূর তোমার  প্রতিচ্ছবি পড়ে

সেই প্লাবনকালকে অহল্যা অপেক্ষা বলে ডাকি।


সকালহীন  রাত  কি হয় কখনও?









সে -যে -জড়িয়ে-আছে

"দেখেছো কি তাকে"--- সকালের কাঁচা রোদ করবীর গালচে

 পেতে ঘুমভাঙা চোখে আমায় হাতছানি দেয়।

 চিরসবুজ হাসিতে কি মনলোভা সেই আপ্যায়ন!!


 উঠে যাই পায়ে পায়ে, শেষ চাতালে আকাশ আসে অনেকটা

 কাছাকাছি-- মেঘলা আকাশের আয়নায় গুলিয়ে গেলে

 নিজের মুখের আদল, শুনি তার বকুলের পাপড়ি ঝরা স্বর।

 ভেঙে যায় বুকের জাঙাল।

 তছনছ করে দেয় রোপিত আবেগ।

 একটা আলোছায়ামাখা বিরহ বিধুর আলো,আমাকে

 আচ্ছন্ন  করে ।

 মৌটুসি শালিকের পাখার ঝাপট ফেরায় সংসারে।


 কিন্তু সারাদিন অবিরাম একলা সিঁড়ির দুর্বার আকর্ষণ--

 গর্ভগৃহের অন্ধকারের মত সন্ধ্যা আরও নিবিড় হলে

 মন্দ্রসপ্তকে বাজে তারসানাই,নিভৃত সিঁড়ির  কোলে।

 তেল টুপটুপ প্রদীপের মত চোখ ভরে ওঠে জলে।

 আকাশ  তখন অন্ধকারে

 আলোকবর্ষ  দূরে।

 পূরবীর কোমল রেখাব ভেঙে,নক্ষত্ররা জোনাকি

 হয়ে নেমে আসে।

 আমার অন্তরের অবসাদ,মৃত্যুর জড়তাসমুদ্র ভেসে যায়।

 অস্তমনালোকে জেগে ওঠে অর্ন্তজ্যোতিবলয়

  

 মনে হয়, না বলা কথার মত, যে অচেনা জীবন

 বসে আছে যাপিত জীবনের  পাশে---

 আমি তার কতটুকু জানি?

 কেই বা জানে  তার সবটুকু?


**********************************************************************************************************



জবা ভট্টাচার্য

জন্ম, বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা সবটুকুই  কলকাতায়। বিবাহ সূত্রে  উত্তরবঙ্গে আসা। ভালোবাসা থেকে লেখালিখি করা। এ পর্যন্ত  সাজি, মান্দাস,  বিবর্তন, সহ বহু ছোট বড়ো লিটল ম্যাগাজিনে লেখা প্রকাশিত  হয়েছে। নিজের  একটি কবিতা সংকলন  আছে "মাধুকরী  মন"।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন