বিকাশ চন্দ / দু'টি কবিতা
নিয়তি সন্ততি
ছায়াহীন বিভীষিকা আগুন স্পন্দন দোলে আমরণ
বন্দীত্ব বোঝেনি মেঘ প্রেম দূত সাদা কালো ছবি,
জল জমিনে মেলেছে শরীর ম্রিয়মাণ রাত একা
বনভূমি রঙ মাখে যন্ত্রণা জড়িয়ে রঙিন প্রজাপতি
বাধ্য সময় ডেকে ছিল নির্দিষ্ট ছিল না আমারও আবাস ভূমি
সমুদ্র হাওয়ায় নুন স্বাদ পরস্পর জল ভেজা ঠোঁটে।
পশ্চিমা মেঘ গোধূলি চাতরে বিষণ্ণ ক'টা গাছ কঙ্কাল
তবুও সবুজ সংকেত চেনে ক'টা সাদা বক মাছ রাঙা মেয়ে,
জল থইথই স্রোতের টানে দুলছে শরীর আঁতুড় শেকড়
ভালোবাসা বল্লরী দোলে আহা মৃদঙ্গের বোলে ব্রজবাসী,
কুঞ্জবন চেনে পরকীয়া সুখ তোর চেনা অরণ্য ঘর
শরীরী উষ্ণতায় ডানা মেলে মন ময়ূরী তখন।
প্রান্তর বাস বহুকাল নিঃশ্বাসে দোলে কৃষ্ণচূড়া লজ্জানত
ফেলে এসেছি হলুদ বিকেল চেনা আয়োজন পরম অধিবাস,
সকল কথার ভেতর সবেদন অক্ষর ভেজে নিঃসঙ্গ যখন
রাধাকাল ডেকেছিল যমুনার নীল ব্রজের বিকেল,
বহুবার আমি একাকী ভেজা ডানায় ডাকে সিন্ধু সারস
অন্তঃসত্ত্বা রাতের সময় জানে নিধিকাল নিয়তি সন্ততি।
এক মুঠো মাটি
কথারা বড়ো বেশি জড়িয়ে ছিল পালকের মতো নরম
অন্তর কুলে অবিশ্বাসী যত বরাভয় ছিল নিবিড় উচ্চারণে,
সহমর্মি শরীরের স্পর্শ ঘিরে আছে সে কেমন অরূপ বলয়
বুক পেতে ধরে আছি আমি বৃক্ষপিতার বিদীর্ণ হৃদয়,
সমকাল বোঝেনি বংশের ধারাপাত শাখা পাতা ফুল ফল
ধমনী শিরার মতো শেকড়ে বাকড়ে রেখেছি অঞ্জলি বৃক্ষ জননী।
নীরবে জ্যোৎস্না নামে পাড়ায় জানে হাহাকার শুধু
গতায়ু সময় বুনছে কথা নীল পথে হাঁটে যুবক যুবতী
অবহেলায় ভেসেছে শরীর গর্ভছেঁড়া নদীর উজানে
অহংকারী রাজার উল্লাস মোছে পদচিহ্ন যত কাদামাটি,
বিষণ্ণ ফুলেরা বেহিসেবী জিবনের কানাকড়ি পলিমাটি
উৎস জানে প্রতিদিন নদীর গতিময় মগ্ন আত্মরতি।
গাছ পাখি জল মাটি জানে ঘিরে আছি প্রকৃতি বাসনা
আমার শ্বাসের শব্দ বাতাসে সম্মতি দিয়েছিল বৃক্ষপিতা,
বৃক্ষ জননীর আঁচলে শস্যের বাগানে আমার সন্ততি
ভেজা ঘাসের উপর ফেলে গেছে বিঘিনি থাবার ছাপ,
সুগন্ধী ফুলের ঘ্রাণে বুনো সময় ছেঁড়ে শরীরী যাপন
আত্মাহীন শরীরে অন্বিষ্ট একমুঠো মাটির আবাহন।
************************************************************************************************


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন