কবিতাগুচ্ছ * প্রদীপ ঘোষ
সপ্তমেধ
১
সংলাপের কোনো ক্রিয়াকাল হয় না। তাই
বয়সও বাড়ে না এতটুকু। শুধু অভিনেতার।
এই তো ক'দিন আগেও যে যুবকটি
বৃদ্ধ ব্যাক্তিটি কে বলে ছিল ! 'আপনি কিছু
দ্যাখেননি মাস্টারমশাই'। আজ আর সেই বৃদ্ধের
ভয় পাবার কিছু ছিল না। যুবকটি নিজেও
আজ প্রায় বৃদ্ধ। তাহলে নাটক এখানেই থেমে যাবে ?
নতুন কোনো যুবক, অভিনেতা। আবার কোনো বৃদ্ধ,
মাস্টারমশাই। জীবন কিংবা নাটক কখনও
শেষ না হওয়া অনুচ্ছেদ।
২
বুক পুকুরে সময়ের পার ভাঙ্গে
উথালি পাথালি নদী ভরা ঢেউ
প্লুতস্বর; নৌকা ফেরাওওওওও...
শুনলো না কেউ।
৩
সেই যে নেটে একটা ছবি ঘুরে বেড়ায় !
ধু ধু ফাঁকা মাঠের মাঝখানে ইমারতির ভেল্কি !
দু'টি স্তম্ভে লাগোয়া একটুখানি পাঁচিল তাতে
খিলান আর দরজা। এ গেহ'র প্রাচীরের দু'দিকে
দু'হাত ভেরেণ্ডার বেড়া। ন'য়ে নবগ্রহের প্রবেশ ব্রাত্য।
দশে দিক উন্মুক্ত।
আমার আমি-টা অমন-ই। লগ্ন রাশি জানি না। দশা
অন্তর্দশায় গ্রহ নক্ষত্র নিপাট, উক্ত গম্বুজের মতো।
৪
এত বড়, বুড়ো হয়ে গেলাম কবে ?
আমারও তো কাউকে দাদা ডাকতে ভীষণই
ইচ্ছে করে। মূলধন ফেরাতে তো পারবো না
এ জীবনে আর। ঋণের মহাজন ভেবে বেতালের
সাদা ভূত ভর করি নিজের-ই ঘাড়ে।
৫
কুয়োর ভেতরে জলের কুয়াশা। চানের প্রয়োজনে বালতি
ফেললাম। ওমা ! বালতি মায় দড়ি ডুব ফটাস্। ঘুম
ভাঙ্গলো ভ্রমরের। কপিকল বললো আজব আনাড়ি।
কুয়োতলা জুড়ে বিজবিজ করছি
আহা রে ! মানকচু গাছের সারি।
৬
আমার ঘুড়ি লাটাই ছিল আর মস্ত আকাশ। আর আর
ভোকাট্টাআআআ... এত এত দিন পগারপার। একমাত্র
আমি-ই রয়ে গেলাম, আর আকাশটা ও ছোট। বাকি
সব্বাই অনেক বড়, প্যাঁচ খেলতে কেউ ডাকে না আগের
মতো। এখন আকাশ দেখি না আর। লাটাইয়ের সুতো
ছিঁড়ে গ্যাছে। ন যযৌ ন তস্থৌ ; আমার ইহকাল পরকাল
তথাগত। আজকাল চারপাই, কেউ ব্যবহারও করে না,
জলচৌকি। জয় জয় বিশ্বকর্মা মাইকি......
৭
দুগ্গা, অপু রে। কিছু-ই দেখি না তো ! না ট্রেন না কাশফুল
না ছাতিম সুবাস। যেদিন রোদ্দুরের গায়ে ছায়া ছায়া
বুঝতে পারি আশ্বিন মাস। বলি ত্রিনয়ন খোলো মা গো।
দ্যাখো দাঁড়িয়ে আছি জলশূন্য জ্ঞানশূন্য নিরম্বু আকাট।
মারবে কী গো ! আমায় অসুর করো। এ জীবনে এখনও
মেলেনি তিন বাঁও। না যদি পারো; আরো যন্ত্রণা, যন্ত্রণা দাও
************************************************************************************************
'দেশ' পত্রিকা সহ অন্যান্য লিটল ম্যাগাজিন, ই-ম্যাগে স্বরচিত কবিতা প্রকাশিত। ফেবুতে যথারীতি নিয়মিত। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞানে স্নাতক (বঙ্গবাসী কলেজ)। পরবর্তীতে আইন নিয়ে পড়াশুনা (সুরেন্দ্রনাথ ল'কলেজ) এবং জর্জ টেলিগ্রাফ ইনস্টিটিউট থেকে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা (সিওপি)। নিজ পেশা। কলকাতা নিবাসী।




সরবর্ণ এক উন্নত মানের সাহিত্য পত্রিকা। এতো দিন পড়ার সুযোগ হয়নি। প্রতিটি বিভাগ যথেষ্ট বলিষ্ঠ। দেবাশীষ সাহার উপন্যাস অন্যান্য কিস্তি পড়তে পারিনি। কেননা সদ্য আমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে এই মূল্যবান সংখ্যা টি। সুন্দর সমাপনী।
উত্তরমুছুনঅনেক অনেক শুভেচ্ছা প্রিয় কথাকার মহাশয় কে।