ভাইরাস-এক
শতদল মিত্র
গাড়িটা গর্জন করে ওঠার মুহূর্তে একটা চাপা শ্বাস অজানতে বেরিয়ে এলো অভিজিতের বুক খালি করে। সে যান্ত্রিক ভাবে গাড়িটাকে গড়াতে দিল। তার অলস চোখে ড্যাশবোর্ডের ঘড়িটা ভেসে উঠল—ন’টা বেজে চল্লিশ। এবং যেহেতু সময়মাপা তার জীবন, ফলে সময়ের এই গড়িয়ে যাওয়া তাকে চকিতে সচকিত করে এই স্বগতোক্তিতে—অনেক দেরী হয়ে গেল আজ! যা প্রতিবর্তে তার গাড়ির গতিকে বাড়িয়ে দেয়। যদিও লকডাউন কথাটা তার মনে ভরসা যোগায়, কেননা সে শব্দে জনহীনতার আদেশ থাকায় রাস্তা ফাঁকা। অভিজিত্ কর, একটা নবরত্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সিনিয়ার ফাইনান্স ম্যানেজার যে, তবুও নিশ্চিন্ত হতে পারে না ততটা, কেননা তার গাড়িটা এ মুহূর্তে একটা ট্রাফিক সিগন্যালে বাধ্যত খাড়া। যদিও তা নব্বই সেকেন্ডের, তবুও তা তার কাছে যেন অনন্তই। সে চায় না তার কেরিয়ারে কোথাও কোনও বাধা আসুক, তা দশ মিনিটের লেট নামক তুচ্ছ হলেও। সিগন্যাল সবুজ হলে গাড়ি আবার মসৃণ গতি নেয় বাধাহীন ফাঁকা রাস্তায়, যা তার মনে অন্য পথের বিঘ্নহীন মসৃণতা আঁকে— সিনিয়ার ম্যানেজার-ডিজিএম-জিএম-সিজিএম। এমনকি ইডি। নয়ই বা কেন? এখনও বারো বছর তার চাকরিজীবনের মেয়াদ। অভিজিত্, এ-কে স্যার যে, এসি-র ঠান্ডাটা আর একটু বাড়িয়ে দেয়। রাস্তায় তখন মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহের দাপট। হঠাত্ই একটা হালকা উড়ো মেঘ ভেসে এলে সে দাপট ছায়া-আচ্ছন্ন হয়, যা মায়া আনে মানুষ অভিজিতের মনে। ফলে তার বুক চিরে আবারও একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে, যে মায়ায় কুণালের মুখ ভেসে উঠলে অভিজিতের অবচেতন মন যেন ধীরতা পায়। মেঘ তখনও ছায়া বিছিয়ে থাকে।
কুণাল অভিজিতের স্কুলের বন্ধু, প্রিয়ও। ইঞ্জিনিয়ার সে এবং অন্য একটি নবরত্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ডিজিএম। অভিজিত্ও হতো, কিন্তু সে কমার্স-এর ছাত্র, তাই অবধারিত ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে কুণাল যখন চাকরিতে ঢোকে, সে তখন এম॰কম॰, তারও পরে কস্ট অ্যাকাউন্টেন্সি পাস করে সে যখন চাকরি পায়, ততদিনে অভিজিত্ চাকরি জীবনে কুণালের চেয়ে পাঁচ বছর পিছিয়ে পড়েছে। কিন্তু তা তাদের বন্ধুত্বে চিড় ধরায় নি। বস্তুত এ ক্ষেত্রে চাড় বেশি ছিল যেন কুণালেরই। ছিল—এ কথাটি মায়াতুর হয়ে ওঠে অভিজিতের মনে, কেননা আজ সকালে মুম্বাই থেকে আসা ফোনকল তার ঘুম ভাঙায় এ দুঃসংবাদে যে, কুণাল আর নেই। চার দিনের জ্বর। করোনা। তারপরেই কুণালের নেই হয়ে যাওয়া হঠাত্ই কাল ভোরে। এ বৈরাগ্য সময় খায়। সে, অভিজিত্ ভাবে, গত শনিবারেই ফোনে কত জীবন্ত ছিল কুণাল, জীবনে বরাবরই যেমন সে। অথচ পরেরদিন রবিবারেই এলো সে সংবাদ। তখনও সে উচ্ছল—আরে একটু জ্বর, গলাব্যথা... ভাবিস না। অত সহজে...। অভিজিতের ভাবনা পূর্ণতা পায় না, যেহেতু তখনই তার বুক মুচড়ে দীর্ঘশ্বাসের ঝড়। এবং এ দীর্ঘশ্বাস হেতু সময় ক্ষণিক থিতু হলে অভিজিত্ চেতনে ফেরে যেন। সচেতন সে দেখে সে তার অফিসের কাছে পৌঁছে গেছে। অফিস-কম্পাউণ্ডের কাছে গাড়ি দাঁড়ালে সিকিউরিটি গেট খুলে সেলাম ঠোকে। অভিজিত্ গাড়ি ঘোরাতে ঘোরাতে অভ্যাস বসে মাথা নাড়ে, মুখে মৃদু হাসি ঝুলিয়ে। পার্কিং প্লেসে গাড়ি রেখে হাত স্যানিটাইজ করে মুখে মুখোশ আঁটে অভিজিত্। ঘড়ি দেখে—নাঃ, হিসেব মতো দশটা বেজে দশই। বাইরে তখন মেঘ ভেসে গিয়ে আবারও রোদের সেই দাপট। অভিজিত্ লিফট বেয়ে ওপরে উঠে যায়।
ন-তলায় নিজের চৌখুপিতে বসতে না বসতেই ইন্টারকম বেজে ওঠে। জিএম! বিস্মিতই হয় অভিজিত্, কেননা তার ইমিডিয়েট বস ডিজিএম। খুব জরুরী না হলে তো জিএম তাকে তলব করে না। ভ্রূ কুঁচকে ওঠে তার, কিন্তু তা নিমেষমাত্র। পরক্ষণেই যথারীতি হাসি ঝুলিয়ে তার ঠোঁট উচ্চারিত হয়—ইয়েস স্যার। না স্যার। অভিজিত্ সবেগে বেরিয়ে যায় তার চেম্বার থেকে।
--কাপুর কোম্পানীর রিপোর্টটা চেক করেছেন? কোথায় গরমিল বোঝা গেছে?
--এইমাত্র এলাম স্যার... এবার ধরব।
--কিন্তু আমি তো কালকেই আপনাকে ফোনে বলেছিলাম।
--স্যার, কালকে তো আমার ওয়ার্ক ফ্রম হোম ছিল... ফাইল তো অফিসে...
ওকে থামিয়ে দিয়েই জিএম ভ্রূ কুঁচকে বলে ওঠেন—ওয়ার্ক ফ্রম হোম! রাবিশ! ঠিক আছে যান। লাঞ্চের আগে পেলে ভালো হয়। ভেরি আর্জেন্ট... ইউ নো আব্যাউট ইট।
--ইয়েস স্যার।
অভিজিতের জিএম স্যার ততক্ষণে চোখ থিতু করেছেন তাঁর সামনের কম্পিউটারে। এ ইঙ্গিতে সে বেরিয়ে আসে তার বসের চৌখুপি থেকে, ধীর লয়ে। রাবিশ—এ কথাটা তখনও অনুরণন তোলে তার জাগ্রত চেতনায়, এ কারণে যে, সে বুঝতে পারে না কথাটা কাকে বলা হল—করোনাকে, লকডাউনকে, নাকি তাকেই! সেন্ট্রালি এয়ারকনডিশণ্ড পরিবেশেও তার কপালে ঘাম জমে এবং সে অনুরণনের রেশ তখনও যেন প্রতিধ্বনি তোলে, যা আনমনা অভিজিতকে নিয়ে আসে করিডর ছাড়িয়ে সিঁড়ির খোলা আলোয়, স্মোকিং জোনে। অভিজিত্ পকেট থেকে স্যানিটাইজারের বোতল বের না করে আগেই সিগারেট বার করে, দেশলাই জ্বালিয়ে ধরায়। আর সে আগুনের ঝলকানিতেই তার চেতন ফেরে চকিতে। পকেট থেকে তাড়াতাড়ি স্যানিটাইজারের বোতল বের করে হাত স্যানিটাইজ করে। স্বাস্থ্যবিধির এহেন নিয়মতান্ত্রিকতা হাসি আঁকে তার মনে, যে মন বলে ওঠে—শালা! হয়তো বসকে, কিংবা নিজেকেই। জানে না অভিজিত্, কেননা ততক্ষণে জানলার কাঁচ ভেদ করে কলকাতা নগরীর আকাশরেখা তার চোখ টেনে নিয়েছে। দূর উঁচু থেকে সকল জিনিসই কেমন মায়াময় মনে হয় যেন।
বিকেল পাঁচটা। ছুটির পর তার সিনিয়াররা খোপ ছেড়ে বেরুলে অভিজিত্ও তার নিজস্ব ঘেরাটোপ থেকে বার হয়, কিংবা বেরোয় না, যেহেতু কর্পোরেট দুনিয়ায় ছুটির পরও অদৃশ্য ঘেরাটোপের জাল বিছিয়ে থাকে তার মতো প্রতিটি একলাখি-পাঁচলাখি মনসবদারের ওপর ২৪x৭। স্বাভাবিক সময়ে তো সাতটা-আটটা বেজেই যায়। যেমন শনিবার ছুটি থাকলেও অফিসে আসতেই হয়, এমনকি প্রয়োজনে রবিবারেও। লিফট বেয়ে নিচে নামে সে। বাইরে আসে। একটু দাঁড়ায়। দু-একটা গাড়িকে বেরিয়ে যেতে দেয়। পদ-অনুযায়ী যান্ত্রিকভাবে ‘গুড ইভনিং-বাই’ উচ্চারণ করে তার ঠোঁট। অপর পক্ষের ভেসে আসা সম্বোধনেও তার মাথা-হাত আন্দোলিত হয়, সমান যান্ত্রিকতায়। এখন তার মন ফুরফুরে। ঠিক সময়েই সে কাপুর-জট ছাড়াতে পেরেছে। ফলে নির্ভার মন তার দু-পায়েও চারিত হয় যেন, কেননা তার পায়ে অলস ছন্দ। আবার কাল শনিবার, এ ভাবনাও তার অবচেতনে থাকে বোধহয়—যাক! দু-দিন অফিস আসতে হবে না। করোনাকালে অফিসও, শত স্যানিটাইজড সত্ত্বেও, পাঁচ জায়গার পাঁচজনের সমাবেশে ভয় জাগায় বৈকি!
গাড়ির দিকে যেতে যেতে তার মনের অলসতার টানেই হয়তো অভিজিতের চোখ আকাশে আশ্রয় চায় যেন, যেখানে তখন মেঘের সমাবেশে সন্ধ্যার আগাম আয়োজন। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস আগামী বুধবার ‘ইয়াস’ ঝড় আছড়ে পড়বে পশ্চিমবঙ্গে। এ ভাবনাকে সঙ্গে নিয়ে সে গাড়ি স্টার্ট দেয়। কিন্তু ফাঁকা রাস্তা আবার তার মনে লকডাউন, ফলত করোনার ছায়া আঁকে, যে ছায়া মেঘ ও অকাল সাঁঝে গাঢ হলে কুণালের মন আবারও স্মৃতিবিষন্নতায় থিতু হয়।
ফ্ল্যাটে এখনও মৃত্যুর জমাট বিষণ্ণতা। ফলে কথাও থমকায়। সে, অভিজিত্, নিজেকে নীরবে বিশুদ্ধ করে। সে নীরবতা একবারই চলকায় তার ঘরের মানুষ, স্নিগ্ধার এ জিজ্ঞাসায়— কিছু তো করা নেই। টোস্ট করে দেব?
--তা-ই দাও।
এ অবসরে অভিজিত্ সামাজিকতায় ব্রতী হয়। ফোন করে কুণালের স্ত্রীকে, যদিও দুপুরে সে একবার ফোন করেছিল এবং স্নিগ্ধাও। যথারীতি সরকারি কোভিড বাণী, যা এ পরিস্থিতিতে তার মনকে দিয়ে বলাতে বাধ্য হয়—শালা! শুধুই জ্ঞান!
নাঃ, লাশ এখনও সত্কার হয়নি, যদিও ডেডবডি একবার দেখিয়েছিল তাদের। এরপর সবটাই তো কর্পোরেশনের হাতে। লাশ, ডেডবডি-- কুণাল তবে এখন তার কাছে তাই-ই শুধু! একটা করুণার হাসি অজানতে আঁকে তার ঠোঁট, যা মুছে যায় পরবর্তী গভীর এক দীর্ঘশ্বাসে। আত্মস্থ অভিজিত্ চেতনে ফেরে কিছুক্ষণেই, কেননা অনলাইন টিউশন সেরে তাদের একমাত্র সন্তান গিনি পাশের ঘরের দরজা খুলে তার পেছনে এসে দাঁড়াবার ফুরসত পায় ততক্ষণে— হাই ড্যাড, কেমন আছ? বি কুল!
গিনি, বারোক্লাসের পরীক্ষার্থী যে, এরপর চলে যায় মায়ের কাছে রান্নাঘরে, যদিও তার অস্তিত্ব ছায়া রেখে যায় অভিজিতের চেতনে, যেহেতু সেখানে নতুন উদ্বেগ ঘাই মারে—ফাইনাল তো হবে না। ডিক্লেয়ার করে দিয়েছেই সেন্ট্রাল। কী বেসিসে মার্কস দেবে? ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ভর্তি করা...। নাঃ, ভাবতে পারে না আর অভিজিত্।
অভিজিত্ মেপেই পান করে এবং উইকএণ্ডেই। তবুও আজ অল্প হলেও একটু বেশিই হয়েছে। সারাটা দিনজোড়া বিষণ্ণতা ভুলতে চেয়েই হয়তো। কিন্তু বিষণ্ণতা ছাড়ে না তাকে। টিভি চালায় সে, টিভির রঙিন ছায়াবাজি শব্দালো উগরে দিতে থাকে, কিন্তু তার মন অন্ধ ও বধিরই যেন বা। সে চ্যানেল সার্ফ করে আনমনে। কিছুক্ষণ পর টিভি বন্ধ করে ল্যাপটপ খোলে, অফিসের কিছু কাজ বাকি থেকেই যায় ঘরের জন্য চাকরির শর্তেই, আর এখন তো ওয়ার্ক ফ্রম হোম অনেকটাই। চাপা একটা দীর্ঘশ্বাস অভিজিতের বুক চিরে বেরিয়ে আসে। সে ঢেউয়ে ল্যাপটপের অক্ষর-সংখ্যারা ভাসতে থাকে যেন তার চোখে। ল্যাপটপ বন্ধ করে সে। ব্যালকনিতে যায়, সিগারেট ধরায়। ফালি আকাশে বৃষ্টিহীন থমমারা হাল্কা মেঘ সরের মতো বিছিয়ে থাকে। সামনের ইলেকট্রিক তারে প্রতিদিনের মতোই একলা কাকটা ঘুম দেয়। হঠাত্ই একটা বাইক গাড়লের মতো রাত্রির কার্ফু গুঁড়িয়ে ছুটে গেলে কাকটা ডানায় আড়মুড়ি ভেঙে আবারও নিঝুম হয়।
রাতের খাওয়া সেরে অভিজিত্ আবারও ব্যালকনিতে আসে নিয়ম মাফিক সিগারেট হাতে। থমকায় সহসা, যেহেতু স্নিগ্ধার একটা স্যিলুয়েট ছবি অঙ্কিত ততক্ষণে ব্যালকনির আলো-আঁধারিতে। হঠাত্ হাল্কা ঝড়ো বাতাস বইতে থাকে। মেঘ ছিঁড়ে-ছিঁড়ে যায়। মেঘের আড়ালে তখন চাঁদের লুকোচুরি খেলা। বাতাসে ভাসন্ত স্নিগ্ধার দু-একগাছি অলকচূর্ণ চাঁদের আলোয় ক্ষণে-ক্ষণে ঝলসে ওঠে। দূর থেকে গান ভেসে আসে—এই যে নদী যায় সাগরে। কিশোরকুমারের খোলা-মেদুর গলা। অভিজিতের শরীরে অন্য তৃষ্ণা জেগে ওঠে। সে সিগারেট ধরায়। আলতো হাত রাখে সে স্যিলুয়েট ছবির কাঁধে। ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ায় সে ছবি। তার চোখে জল, যে জলে ভেসে ওঠে এমন শব্দবন্ধন—জানো, এই গানটা না কুণালদা খুব ভালো গায়তো।
অভিজিত্, কুণাল, স্নিগ্ধার হয়ে ওঠা একই এলাকায়। অভিজিত্ কুণালের ছোটোবেলার বন্ধু। কই সে তো গায়ক কুণালের তেমন পরিচয় পায়নি! হাওয়ায় অন্ধকার দুলে ওঠে, অন্ধকারের প্রথম সত্তা তার দ্বিতীয় সত্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়, ফলে সময় বাঁক নেয়। সময়ের সে বঙ্কিমতায় শূন্যতা জাগলে অন্যতর আঁধার ঝলকায়। অভিজিতের হাতের আঙুলের নখ চেপে বসতে থাকে তার বউ-এর কাঁধে। ততক্ষণে অন্ধকার শূন্যতাকে জড়িয়ে নেয়, দোমড়ায়-মোচড়ায়। সময় ভেঙে পড়ে অস্ফুট কান্নায়—জানো, কুণালদা আমাকে প্রোপোজ করেছিল... কিন্তু তখন তো তুমি এসে গেছ।
দোমড়ানো সময় গুঙিয়ে ওঠে—ওর চোখে না তখন কোনো দৃষ্টি ছিল না!
চাঁদ আর মেঘের মায়াঘোরে সময় দুলতে থাকে, দুলতেই থাকে। ফলে স্নিগ্ধার চোখের খাঁজে জমা অশ্রু স্ফটিক হেন দ্যুতি ছড়ালে অভিজিত্ সে আলোয় কুণালকে হাসতে দেখে, যে ছায়া পরক্ষণেই যেন বা অভিজিতের নিজেরই মুখ, মৃত। এ মায়া তার সারা শরীরে ভরশূন্যতা বোনে। স্নিগ্ধার কাঁধে বসা তার হাতের আঙুলগুলো ক্রমশ শিথিল হয়। শিথিল সে হাত স্নিগ্ধার মাথা আলতো ছোঁয়।
অভিজিত্, অফিসের এ॰কে॰ স্যার, গিনির পিতা যে, তার বিবাহিত স্ত্রীকে একলা কাঁদতে দিয়ে বেডরুমে আসে অন্ধকার ধরে ধরে যেন এবং নিজের ভরহীন শরীরটাকে বিছানায় ছুঁড়ে দেয়। কখন যে ঘুম নেমে আসে তার চোখে, সে জানতেও পারে না। শুধু এসি-র বিন-বিন শব্দকে ছাপিয়ে সময়ের টিক-টিক ধ্বনি জেগে থাকে আরেক সকালের অপেক্ষায়।
***********************************************************************************************


খুব সুন্দর
উত্তরমুছুনদারুন।
উত্তরমুছুন