সাধন চৌধুরী / দু'টি কবিতা
নির্লিপ্ত বাসুদেব
জগদ্দল পাথরের ভার, আনত মাথা
প্রস্তরীভূত হবে না মানুষ মৃত্যুর আগে-পরে
কৃষ্ণের কল্পিত মিথে সাজায় কল্পনা
দুষ্ট দমনের শপথ ভুলে গেছে যাদুকর ।
দুষ্ট শব্দের অর্থবিভূতি বিষ্ণুলোকে ঝুঁকে
আর এক অর্থবেধ, বাড়িয়ে নিয়েছে আদালতে।
তোমার মন্দির সৌষ্ঠব ক্ষুধার্ত শিল্পীর নির্মাণ
খাদানের পাথরে রক্তের কালো দাগ
আরও গভীরতলে স্তূপীকৃত মানুষের হাড়
যদুবংশ ধ্বংস হয়েছিল অনিবার্য পাপে ।
ইহলোক অসার নয় , পরলোকে পক্ষপাত
আরোপিত ধর্মনীতি, কূটকৌশল দুরস্ত বড়ো
তোমার পুজো তো ফেইক কর্মশালা
নিজেকেই সাজায় মানুষ, সন্দিগ্ধ বিশ্বাস
দুর্গতি সদ্গতি সব তার কর্মফল, তুমিই নিমিত্ত
তোমাকে নির্বাণ ভাবে, অবধারিত মরণ অব্যাহত।
হে প্রাজ্ঞ বাসুদেব, তুমি মৃত, নির্লিপ্ত থাকো তাই ।
আমি কান পেতে রই
ওপর থেকে নির্দেশ আসে……
সেকিছু আকাশবাণী অলঙ্ঘ্য দৈবাদেশ ?
তারপর দৃশ্যান্তর : ভাঙচুর লণ্ডভণ্ড
আগুনের ভস্মশেষ সদ্যঃপাতী বাসি রক্ত
মহাকলরব উচ্ছন্নে যায় অস্ত্রাঘাতে
একান্নবর্তী আত্মীয় বান্ধব সমাজ
ঘরবাড়ি ক্ষেতখামার মনিষ্যি বিস্তর
সব ধ্বংস মুখে ধায় ।
একদিকে ঝিম নীরবতা ঝুটা সন্ন্যাস
রাজনৈতিক বীক্ষা স্ট্রাটিজি আর
খচরা প্রস্তাবে ব্যস্ত বিরোধী শিবির ।
রাতের কবন্ধ আঁধার দিনেও ভাঙচি কাটে
প্রকৃত রাতের প্রহর হাহাকারে ভাঙে
কান্না অনিঃশেষ ।
আমি কান পেতে রই, আজন্ম বধির
আমি চোখ মেলে রই, কালার ব্লাইন্ড
আমার বৃত্তে তবু নিরাপদ নই
"" নগর পুড়িলে কি দেবালয় এড়ায় "" ?
************************************************************************************************
মূল নাম,সাধন চৌধুরী, বাড়ি, আসানসোল, করুণাময়ী হাউসিং,প্লট_২৩,পোঃঅঃ,রামকৃষ্ণ মিশন, বিবেকানন্দ সরনি,পশ্চিম বর্ধমান। অবসরপ্রাপ্ত কলেজ টিচার। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে স্নাতকোত্তর, বিশ্বভারতী। প্রকাশিত কোনো কবিতার বই নেই।



খুব ভালো অনুভূতি ব্যক্ত করেছে।
উত্তরমুছুন