স্বরবর্ণ
সৃজনের মৌলিক স্বর
স্বরবর্ণ * ২০ * শারদীয় ১৪৩১
১ আশ্বিন ১৪৩১ * ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বাংলার ষড়ঋতুর প্রত্যেকটি নিজস্ব রূপ-বৈচিত্র্যে ভরপুর। শ্রেষ্ঠ কোনটি? এক কথায় বলা মুশকিল। শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা এক্ষেত্রে নিরঙ্কুশ নয়, কারোরই । কারণ, মনের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সৌন্দর্য- আস্বাদনরেণু ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন হয়। তাই বর্ষা যদি রবীন্দ্রনাথের প্রিয় ঋতু হয়, জীবনানন্দের হেমন্ত, ‘হেমন্তের অরণ্যে আমি পোষ্টম্যান’ বলে উঠবেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়, ইংরেজ কবি শেলী লিখবেন ‘if winter comes can spring be far বিহাইন্ড ’ আর কেউ-বা অন্যরকম কিছু।
কিন্ত,আমরা যারা ছোট বড় মাঝারি পত্রপত্রিকা নিয়ে ঘর করি, তা মুদ্রিত বা ওয়েবজিন যা-ই হোক না কেন, তাদের কাছে শরৎ প্রতি বছরই একটি বিশেষ মাত্রা নিয়ে হাজির হয়, বিশেষ করে যখন পেঁজা তুলোর মতো মেঘ আকাশে ভেসে বেড়ায়, শরতের সোনা রং রোদ্দুর শিশুর মত নিষ্পাপ আঙুলে জড়িয়ে ধরে গাছ-গাছালি লতাপাতা-তৃণ, কাশফুল মাথা দোলায় খাল-বিল -নদী পাড়ে, তখন কী এক দোলা লাগে হৃদয়ে- মননে, ঘরে বসে থাকা যায় না, তা এই গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক সামাজিক অবক্ষয়ের যুগেও। দিনরাত এক করে কবি লেখক সম্পাদকেরা সৃষ্টির শিউলি ফোটাতে চান, যার যেমন সাধ্য তেমনি । কিন্তু, এবার যেন সেই চেষ্টায় তাল কেটেছে।
গত ৯ আগস্ট মধ্যরাতে কর্তব্যরত অবস্থায় তিলোত্তমার খুন ও ধর্ষণের মতো নৃশংস নারকীয় ঘটনা ঘটে গেছে। এই ঘটনার তীব্র অভিঘাতে শরৎ দিশেহারা। উৎসব হারিয়ে গেছে মানুষের মন থেকে, পরিবর্তে ধিকি ধিকি জ্বলছে ক্ষোভ ও দ্রোহের আগুন। চলছে লাগাতার ধর্না অবস্থান রাত দখল ভোর দখলের মতো কর্মসূচি। এ সবের মূল লক্ষ্যঃ তিলোত্তমার বিচার চাই। কলম ছাড়া কবি শিল্পী সাহিত্যিকের কী-ইবা অস্ত্র আছে? এই প্রবল দুঃসময়ও তাঁরা অক্ষরমালা দিয়ে সাজিয়েছেন শারদ অর্ঘ্য। তাঁদেরকে শ্রদ্ধা, প্রণাম। এই প্রসঙ্গে কয়েকদিন আগে লেখা একটা কবিতা বার বার মনে পড়ছে ----
দাবি
নদীপাড়ে নেই কাশফুল
কবে বিচার পাবো অভয়ার
সারা দেশ ভেবে আকুল।
রাতের দখল নিয়েছে তিলোত্তমারা
ভেদরেখা মুছে গেছে দিনরাত্রির
লৌহকপাট, জল কামান দিশেহারা
গোলাপ হাতে ওরা শান্ত, ধীর।
আকাশ ফুঁড়ে লক্ষমুঠি স্লোগানমুখর
চায় খালি জাস্টিস ফর আরজিকর।



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন