পাথুরে বোধনের কান্না শুনি কাঁশবনে
( উৎসর্গ দীপ্তিশিখা দাস )
দীপংকর রায়
২২৪
ছোঁয়া না ছোঁয়ার মাঝে
দোলে নৌকা ;
কত জল মেলায় সুদূরে ?
সেই আগুনে
কে যেন কেবলই পাশ ফিরে শোয় ;
চক্রাকার সেই অসহায়তা ,
কত নির্মোহ
যেন খেলার খেলা সব।
বিরহ মেলায় কত বৈতালিক ,
বৈতালিক চলেছে বসন্ত বাহারে .....
কোন অনুরাগে কাঁদছে কে ?
সেই আগুন প্রহসনের
একমাত্র সাক্ষী কে ?
সেই চিতায় দাহ করে
কে কার কলঙ্ক !
কত অসহায়তারা দরজা জুড়ে
দুহাত মেলিয়ে দাঁড়ায় যেন । রক্তে মহা সংকিত্তন তখন ....
রক্তে মুখ গুঁজে কাতরায় রাধা !
এই গাঁথা
ভাঙ্গ যদি ভাঙতেই পারো ------
ভাঙতে ভাঙতেই ছুঁয়ে যাবে এমন রূপ
যে বিগ্রহে মূর্ছিত তিনি নিজেই ।
মানবের মহা মানবতা সেই অর্ঘেই যায়
যে পথে ফেরা আজ তোমারও
সেই বিগ্রহে ------
২২৫
যন্ত্রনার বিপরীত সুখ হয়ত প্রতিশোধ চায়
সে জন্যেই কি
এত সকাল সকাল কীর্তনের সুরে
ভেসে যায়
জানলা দরজা কপাট ....
কে যায় এই জেগে ওঠায় ?
কত সাদা মুখটুকুও পুড়ে যায় এই রোদে ;
নিভৃত সেই দাহ
দিনের শুরুতেই ?
ঘুমের তন্দ্রারা কথা বলে ওঠে , বলে
বলছি তো আর নয় ;
এত অসাড়তায়
বন্ধ হয়ে গেল কান !
বলি , না না , খেলো
এই খেলার নিঃশব্দ করতালি শুনি আরো কিছুক্ষণ
ঐ তো চলে গেল দেখি কত চোখের নিস্পলক সুখটুকুও ----
তবু সেই মুখের ভাঙা-গড়াতেই
প্রাণের সকল খেলা দেখে নেওয়া
তবে আর কেন
শুধু শুধু এত অপরাধী হওয়া ?
হে ঈশ্বর
তোমার কোনো পরিচয় রেখে গেল না সে ......?
২২৬
বাঁধের জলে হাওয়া পেয়ে
কত মনখারাপেরা ফিরে গেছে .....
রাতের ট্রেনে ফিরে আসতে আসতে কতবার গুটিয়ে শোয়া
একমুঠো আবীর রাঙানো মাঠের হু হু হাওয়ায়
সকলেই তো কতবার চোখ কচলে নিয়েছিলাম !
কখন যে মেঘ সরে গেল , ঠান্ডা হাওয়া
রাত ভোর হয়ে এলো বুঝি ?
কে যে কোন দিকে ফিরে গেল আজ .....
কার কান্না কার বুকে ছিঁড়েখুঁড়ে
কুটিকুটি হয় যে , সে কথা ভাবতে ভাবতে
কে যেন বলে ওঠে ----
" আজ কিছুই ভাল্লাগছে না ...... কাল , কাল ,
অন্য কোনো একদিন .... সব বলবো মন খুলে ...."
যেভাবে চেয়েছিল দুপুরের রোদ
সেই পলাশের দিকে ;
সে ভাবেই চেয়ে চেয়ে দেখবো
সেই আগুন প্রহসনের সকল সম্ভবনা ------
২২৭
তৃষ্ণার গলায়
জল ঢালতে দেখি
সে সত্যিই সত্যিই
দীপ্ত শিখা ।
শরীর জুড়ে নেমে যায় কত আগুন ......
আঁকাবাঁকা রেখায়
কে যেন শুধুই কুণ্ডলী ঘোরায় ----
সেইসব আরতির উন্মাদনা মনে পড়ে ।
এই সব মাঠে মাঠে
কারা যেন
কত দূরে ছিটকে পড়েছিল ; সেই থেকেই চৈতন্যে ভাষ্কর্য
কারা যেন গেয়ে ওঠে কত সব বিরহের গান .....
তৃষ্ণা কি শুধুই আমার ?
কত ছলনার গল্পে গল্পে
শেষ হয় এত সব ভূমিকথা
রুপকথাদের অবসরের সংলাপ ।
২২৯
সান্ধ্য পথে ঘুরে এলো অনেকটা সময় ,
সময়ের বিভোর করতালি উঠেই
থেমে যায় সকল উচাটন -----
জানি না বললে ভুল
না জানি , না বুঝি
তবুও সকল থাকাই অনিশ্চিত জেনো
দ্রুতগামী পথের উদাহ সংগীত
এক ঝটকায় আসে এক ঝটকায় ফিরেও যায় ......
কোথাও লোভ লালসার আত্ম ধিক্কারে
যার যার থেকে ছিটকে পড়ে কি মিছিল ভেঙে ?
মানুষ মানুষের জন্যেই খুন হয়
নাকি সকল শিকার পর্বে
অনাদি কালের সে সব প্রতিহিংসা ;
আরো ভালো করে বাঁচার আকাঙ্ক্ষা কে ঘিরে করে নাচ ?
প্রবৃত্তির অনুমেয় অনুশীলন ঠিক তখনই -----
মানুষের মাঝে মানুষের বিলাপ !
মৃত ও মৃত্যুর
জোড়া করতালি শোনা আরো .....
আয়েশ আরাম ফলাফলের সারাৎসার যে টুকু ?
আমরাই চিনি না
নিজেকে
তাই আদিখ্যেতার অর্থ নেই
দায় নেই
জেনেশুনে যে আগুন জ্বালি দেহে
সে দাহ কার ? উত্তর নেই ।
বস্তুত সান্ধ্য পথ জানে না ,
কত দূর ছুটিয়ে
সে তার আপন সত্তার বিনাশে
প্রস্তুত করে নিজেকে---
এর পর আর কি নিজের মুখ
দেখতে পারি আয়নায় ?
নাকি তোমাকেও দাঁড় করাতে পারি
সেই মেরুদন্ডে -----?
২২৯
সান্ধ্য পথে ঘুরে এলো অনেকটা সময় ,
সময়ের বিভোর করতালি উঠেই
থেমে যায় সকল উচাটন -----
জানি না বললে ভুল
না জানি , না বুঝি
তবুও সকল থাকাই অনিশ্চিত জেনো
দ্রুতগামী পথের উদাহ সংগীত
এক ঝটকায় আসে এক ঝটকায় ফিরেও যায় ......
কোথাও লোভ লালসার আত্ম ধিক্কারে
যার যার থেকে ছিটকে পড়ে কি মিছিল ভেঙে ?
মানুষ মানুষের জন্যেই খুন হয় ;
নাকি সকল শিকার পর্বে
অনাদি কালের সে সব প্রতিহিংসা ;
আরো ভালো করে বাঁচার আকাঙ্ক্ষা কে ঘিরে করে নাচ ?
প্রবৃত্তির অনুমেয় অনুশীলন ঠিক তখনই -----
মানুষের মাঝে মানুষের বিলাপ !
মৃত ও মৃত্যুর
জোড়া করতালি শোনা আরো .....
আয়েশ আরাম ফলাফলের সারাৎসার যে টুকু ?
আমরাই চিনি না
নিজেকে
তাই আদিখ্যেতার অর্থ নেই
দায় নেই
জেনেশুনে যে আগুন জ্বালি দেহে
সে দাহ কার ? উত্তর নেই ।
বস্তুত সান্ধ্য পথ জানে না
কত দূর ছুটিয়ে
সে তার আপন সত্তার বিনাশে
প্রস্তুত করে নিজেকে---
এর পর আর কি নিজের মুখ
দেখতে পারি আয়নায় ?
নাকি তোমাকেও দাঁড় করাতে পারি
সেই মেরুদন্ডে -----?
২৩০
এক একটি অভ্যাস এক এক রকম ;
এক একটি অভ্যাস এমন , সকাল হলেই চেয়ে থাকে ----
কে যেন উল্টো দিক থেকে ইশারা পায় ;
সব কিছু ঠিকঠাক হলেও
সবটা ঠিক নয় ।
বারান্দার ওপাশে কাটগর ফুলের ভেতরের অনেক হলুদ
উদ্ভাসিত হয় অন্তরালের সকল মুর্ছনায় -----
২৩১
সব চুলোয় পাঠিয়ে
তাঁর হাতের উপর তুলে দিয়েছি
এই গোল্লাছুট ......;
এক হাত সেই হাতটি ধরে
নিতান্ত মজায় সেও আমায় তার মাথার উপর চড়িয়ে
ছুঁড়ে ফেলেছে বারবার সেই চৈত্রের মাঝমাঠে -----
মাথা ঘুরে পড়ে যাই বহুদূরে
আবার সেদিকেই বাড়িয়ে ধরি এই দুইহাত ,
সেও বেশ মজার খেলা ভেবে দুহাত টি ধরে আমাকে ছুঁড়ে দেয় ,
এই ভাবে দিতে দিতে
আমি চলে যাই
অনেক মেঘের ওপারে
আর খুঁজে পাই না নিজেকে ;
আমি হারিয়ে গেছি অনেক চৈত্র রোদে
আমি হারিয়ে গেছি হারিয়ে ফেলেছি অনেক পথ ,
অনেক মাঠ , জলা-জঙ্গল নুড়িপাথর ;
সব হারিয়ে কাঁদতে কাঁদতে তাকেই খুঁজছি
যার স্বার্থান্বেষী ছলনাময় দুহাতের ভেতর
ছারখার হয়ে গেছে চারদিকে ;
দেশ হারিয়ে পাড়ার মোড়ে মোড়ে
যে সব উপমা অনুপ্রাস বিদ্ধ করতো
তাদের ও নির্বাসন ।
সবুজ ভিজে নদী সোঁদা গন্ধ
তাদেরও ;
কোথায় গেল যে
কারা হত্যা করলো সেই সব অনুভব
অনুরণন
জানি না , ভাটফুলেরাও জিজ্ঞাসা করলো বড় উড়মার
সান্ধ্য পথে
বললো , কী হে , কপট ছলনাময় ভ্রান্ত প্রেমিক ,
গেরুয়া বসন ছেড়ে এ আবার
কোন আলোড়নে তাকিয়ে আছো
যে পথে আর কোনো দেশ হারানোর
চিৎকার নেই -----
দেশ কি তবে
মানোবিক হাঁটুর ভাঁজে মুখ গুঁজে কুঁকড়ে গেল ?
গন্ধরাজ বিকেলের সেই হাহাকার
ঐ দেখ খেয়ে নিলো
যে পথে থমকে আছে উত্তরার বিস্ময় ..... ;
নানা মুখোশের আড়ালে
সামনে পেছনে দুই পা
সেই আমার
অনেক অসহায়তা চলেছে দেখ
কেমন
দুলকি চালে ......
২৩২
সেদিন অবলীলায় করেছো যে দান
সেই উৎসর্গ ফিরবে কীভাবে ?
সেই অমোঘ যে করে প্রত্যক্ষ
সেই জানে তিমির ছড়ালো কোথায়
কেই বা সেই চারকোণা ঘিরে বৃত্তরত ;
সেই মালার সকল ভার
বইতে জানে কত জন ঠিকঠাক ;
পথময় কী যে হাহাকার ,
কী যে উপুর্যপরি ভেঙে পড়লো আকাশ ;
ছুঁয়ে দিলো কে যে কার অজানা ঠোঁট ;
বহু বহু দূরত্বের ছায়াময় পথ
কেবলই আরো বৃত্তরত ;
কতবার কে কার চোখের গভীর থেকে উঠে
ডুবতে যেয়েও ডুবতে পারলো না !
সে তুমি কে কেই বা চেনে ;
কেউকি দেখেছে তাকে আজও ?
ওহো ! কী বিষাদ হুমড়ি খেয়ে পড়ে তবুও সেই
মানুষ প্রলাপে -----
কতবার তাঁর নৌকো এসে
কূল ছুঁয়ে চেয়ে থাকে প্রকৃত জলের বর্ণমালায় -----
সে নদীকে দেখেছ কি কখনো ?
দেখেছো কি
তোমার দেখার গভীরে আমি আজ
কত অনন্ত পার করে ফেলি যে !
তাই সব ঘুম নিলাম
সব স্বপ্ন
নিলাম কান্না
কী থাকলো তাঁর তবে বলো তো ;
সবই দেখার অনন্তে উৎসর্গকৃত ?
আর কীভাবে
নিঃশেষ করা ! আর থাকে কী আদেও
যেটুকু দিয়ে
একটুখানি যেতে তিমিরে
সেও যেন হয়ে গেল দান ----
কীভাবে দেখবে
আর একবার ফিরে ?
যে দেখায়
কোথাও কেউ নেই
শুধুই অন্ধকার !
*********************************************************



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন