রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

গুচ্ছ কবিতা * বাবলু সরকার

 



কবিতাগুচ্ছ * বাবলু সরকার 


নষ্ট 

১.

এই তো সেদিন সব বন্ধুরা মিলে 

হারিয়ে গেলাম বিকেলের রোদ্দুরে 


ভাবছিলাম এক আধুনিক বাঁক এ-র কথা 

যেন খ্যাঁতা ইঁদুরের মতো 

চারিদিকে মশারী টাঙিয়ে 

তার চারপাশে ক্ষমতাহীন বিরুদ্ধতা


বেচারা মশা আর অন্ধকার 

সঙ্গদোষ আর রাম এ বেশ 

বিকেল টা কেটে গিয়ে ভোর ভোরে 

চাঁদ ওঠে বাহাত্তর বাই দুই লেনে

অশরীরী নষ্ট আত্মাগুলোর ঘরে 


কঠিন সাদা বরফ খন্ডের মতো 

ওর জরায়ুর দোষ কালো কালো

হাতের মধ্যে দিয়ে বেশ জটিল

এক পথ এঁকে বেঁকে 


দ্বাদশী বুকের এক রূপালী ভাঙা বিস্বাদ পথ

দিশাহীন কৃষ্ণা প্রতিপদ জ্যোৎস্নার ভেতর 

জলজ জন্মে ভরে আছে সমস্ত শরীর জুড়ে 


বনে বনে রক্তচোষার বসন্ত ফুরিয়ে গেছে 

কবেই তার শরীর থেকে 

তবুও লম্পটের মতো রাস্তার দুপাশে 

অপরিচ্ছন্ন শস্য খোঁজার মতো করে 

তার জরায়ু খুঁটে খুঁটে খায়


অতঃপর ছেঁড়াখোড়া চুল কাদামাটি জল

ভেঙে উজ্জ্বল পাতার মতো স্বপ্ন 

আবছা হয়ে ফিরে আসে আমার কাছে 


ভোর হলে তোমাকে ভোর দেব

ওর দেহে কত যে কারুকাজ 

গভীর রাতের একা সাঁকো গাছ

আমি নির্ঘুম পলকে দেখি আলো 

তারকা চোখে অপলক চোখ 


আর দূরের কফিহাউসের ছাদ বেয়ে 

নিমগ্ন সন্ধ্যা নামলে হাত রাখি

অন্ধকারের শরীরে টেনে কাপড়ও খুলে দিই


ওই দেহে কত যে কারুকাজ 

কত যে রোশনাই মিহিন সুরতান

গন্ধ তবু অভিমান জাগতিক কামগন্ধ 

জ্বেলে রাখি অমোঘ বিনিময়ে 

কফিহাউসের দেওয়াল সেঁটে 


দেখতে অবৈধ দিশির মতোন

আমি তাকে মোড়কে রাখি না


খোলা স্ট্র‍্যাপ নাভি লোম তবু যদি 

সত্যি হতো আর ইঙ্গিতে ইঙ্গিতে যদি 

কবিজীবন ঠুংঠাং রঙীন জলে 

সোনা গাছি লেনের দুকামরা ঘরের 

জীবনব্যাপী কত ক্ষত সেরে যায়

মন্ত্রের বলে তুমি তাকে বুঝলে না গভীরে 


এইবার বিকট হাস্যরোলে বুকের দোদুল 

দোল আর একদিকে রাষ্ট্রের আয়ু দ্রুত 

ফুরিয়ে যায় শীঘ্র পতনের মতো 

ধরে রাখে না তাকে শতাব্দী আর

কবি তুমি শুধু বৈপরীত্য ভাবো

অর্থনৈতিক ভাবো আর অযথা ক্ষরণ 


ওরাও সান্নিধ্য পেতে চায়

কথা বলতে চায় নিজের শরীরের সাথে 


কেউ একজন বলছে আপনারই বুকের দোষ 

আপনার বুকেই জন্মেছে বেহায়ার  দেশ

আর অট্টহাসি হাসছে দুঃখ বৈশ্যা মেয়েদের 


এইভাবে বেঁচে থাকা আড্ডা ভণ্ডামো 

লেখালেখি অনুপম না শর্মিষ্ঠা কে

বেশি খুল্লামখুল্লা চলুন দেখে আসি

নিজের চোখে যেখানে সোনাগাছিও

কবিতার কথা বলে বলে শুনেছি 


তাই আর ভদকা মার্টিনি নয় আসল

সুবিধা ও সান্নিধ্য পেতে ক্রমশঃ

বৃষ্টির পথ ধরে চলুন একবার ঘুরেই

আসি নিষিদ্ধ রেড এরিয়ায়


ফিসফিস করে ওই দেওয়াল বেয়ে

রাত্রিবর্ণ হাওয়া বইছে 


সমস্ত এসপ্ল্যানেড জুড়ে 

রাতের বর্ণের হাওয়া বইছে 


আর এক ভ্যাঙরা কবির ডাইরি 

থমকে রয়েছে কিছু লেখার জন্য 


অন্ধকারের নিষিদ্ধ ঢেউ অন্ধকারের

আঁশটে গন্ধমার্কা প্রেম পাখি ও 

তাদের ফুসুরফুসুর কথাবার্তা 


তারপর একদিন সব কথাবার্তা ফুরিয়ে 

আসে হাড় মাংস চর্বি শুকিয়ে পড়ে থাকে 

নিমতলার শ্মশান ঘাটের পাশে

শুকনো ইঁটের মতো রঙচটা দেওয়ালের মতো 


তেমনই তোমার আর আমারও কিছু বলার

থাকে না শুধু শ্লেষ্মা জাতীয় কিছু কথার

দাগ শুকোতে থাকে আর অতীতের 

কোন এক বৃষ্টি ভেজা শ্রাবণের কথা পড়ে থাকে 



********************************************************************



বাবলু সরকার 

 বাবলু সরকার বাদকুল্লা সুরভিস্থান নদীয়া থেকে লিখছেন। পেশায়  প্রাইভেট টিউটর ও এল আই সি কর্মী।  নয়ের দশক থেকে লেখা শুরু হলেও দুই হাজার থেকে পাকাপাকি ভাবে লেখা শুরু। সম্পাদিত পত্রিকা "সম্ভব "। মূলত লিটল ম্যাগাজিনের প্রতিই আগ্রহ। কাব্যগ্রন্থ নেই। লেখা পাঠানোয় ভীষণ অনীহা। এই অনীহার কারণেই হয়তো কাব্যগ্রন্থ হয়নি।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন