শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সুব্রত চক্রবর্তী





শ্রী সুব্রত চক্রবর্ত্তী * দু’টি কবিতা 



মেঘ 

সীমানা পেরিয়ে মেঘের দল
চলে যায় উড়ে বহুদূর
লাগে না টিকিট, দরকার নেই ভিসার
পাসপোর্ট,ওদের সাগরের পরিচয়।

জীবন্ত কিংবদন্তি অমিতাভ বচ্চন 
অভিনয় করতেন রাগী যুবকের 
বিশাল বিশাল কালো মেঘগুলো 
লাইট ক্যামেরা এ্যাকশন,বলতেই 
ঘটায় বজ্রপাত,ঝড়ায় জল,নদীর দেয় রূপ।

নামটা কি মিষ্টি, মৌসুমী,দেখা দেয় 
আসে গ্রীষ্মের পরে আষাঢ় শ্রাবণে
সঞ্চয় যা করে দশমাসে
বাকি দুই মাসে,সবটাই দিয়ে যায়।

কোথাও নেয় ভাসিয়ে,কোথাও রিমঝিম 
কিভাবে বুঝবে ধানের ক্ষেত ; নাকি মাঠঘাট 
পুকুর নদী বিল ভেসে যায় 
পাহাড় থেকে নেমে আসে ধস।

বাংলাদেশ থেকে আসছে উড়ে
হয় না যে ভাই ইমিগ্রেশন চেক
দক্ষিণ থেকে উত্তর,পূর্ব,পশ্চিমে যেতে 
লাগে না টিকিট,হয় না টাকার প্রয়োজন।

তথাপি মেঘ সুন্দরী এমন 
পাহাড়ের চূড়ায় করে আরোহণ 
বর্ষায় রূপ যদি হয় কালো,শর্তে শ্বেতশুভ্র।

















শিক্ষিকা 

শহরের শেষ সীমানায় ঐ যে ঘর
সেই ঘরে রয়েছে অন্ধকার ও অভাব
সেখানে নেই মূর্তি মাটির বা পাথরের 
রয়েছেন দুজন জীবন্ত মানুষ,হয়েছেন পরিচয়হীন।

চারিদিকে আলোর রোশনাই,লোকের ভিড় 
নতুন পোষাকে সবাই চলেছে,প্রতিমা দর্শনে
মাটির প্রতিমা গড়ে তুলতে কুমোরের
লেগেছিল প্রায় তিনটি মাস।

মৃন্ময়ী মায়ের মুখে নেই কথা 
তথাপি,মন্দিরে মন্দিরে তিনি পূজিতা 
শুম্ভ নিশুম্ভকে হারিয়ে,তিনি 
হয়েছেন মহিষাসুরমর্দিনী।

নারী,তিনিও আছে তার রূপ 
অস্ত্র হাতে সুসজ্জিত দেবীর সঙ্গে সন্তানদল 
পূজোর উপাচার সাজিয়ে,চলছে পূজন
মুখে তারা তোলেন নি কিছুই।

অথচ,অন্ধকারে ঐ দুটো মানুষ,অনাহারে আছেন
বহু কষ্ট করে সন্তানদের শিক্ষিত করেছেন
নিজের সন্তানের মতোই,প্রতিবছর তৈরি করেছেন শিক্ষিত
কেউ নেই আজ,সবাই ফিরিয়েছে মুখ,একা ফেলে তাঁদের।

দুই বোন তারা,স্বামীরা হয়েছেন পরলোকগত আগেই 
সমাজ,সময়,সংস্কৃতি নারীর আরাধনা করে 
ব্রাত্য কেবল তারাই,শিক্ষিকা নাম মুছেছে
চিনু আর মিনু ওনাদের নাম,মূল্য! নেই তাদের।


**************************************************************************




      শ্রী সুব্রত চক্রবর্ত্তী


জন্ম ২০ শে আগস্ট ১৯৭২,দমদম জংশন কলকাতা। শিক্ষা বানিজ্য ও কলা বিভাগে স্নাতক। এছাড়া স্টেনো টাইপিং এবং কম্পিউটার ডিপ্লোমা করেছেন। কর্ম জীবন,বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে কর্মরত। বিভিন্ন স্থানে ও বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করেছেন।লেখালেখি ১৯৯৬ সালে প্রথম সারির পত্রিকা,বর্তমানে লেখা বেরোয় "বেকার সমস্যায় জর্জরিত  বেকারত্ব নিয়ে"। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি করেন। প্রথম একক কাব্যগ্রন্থ "সঞ্চালিকা" (২০২২), দ্বিতীয় একক কাব্যগ্রন্থ " আত্মমগ্ন" (২০২৩) আন্তর্জাতিক বইমেলায় প্রকাশিত। এছাড়া শতাধিক যৌথ কাব্যগ্রন্থে তার লেখা বেরিয়েছে। রবীন্দ্র,নজরুল,বঙ্কিমচন্দ্র,ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় স্মৃতি পুরস্কার,সমরেশ মজুমদার স্মৃতি পুরস্কার,রোকেয়া পুরষ্কার সহ রৌপ্য পদক পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। নেশা,কবিতা ও গল্প লেখা। 





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন