বনশ্রী রায় দাস * দু’টি কবিতা
দু’দিনের অতিথি
তুমি চলে গেলে মৃত্যুর হাত ধরে
চলে যাওয়ার পর আমার শরীর কাদামাটি ,
কত শীত চলে গেল আষাঢ় পেরিয়ে ভাদ্র
আশার কথা শোনায়নি কেউ ।
কত প্রপাত উল্কা নিরক্ষরেখা ছুঁয়ে
অসুখ ডেকে আনলো জল থেকে অন্তরিক্ষে
আমি রইলাম মেঘের কাছাকাছি
দুদিনের অতিথি হয়ে ।
দিন চলে যায় কবিতার বরাভয়
অথবা দুঃখ অশ্রুর স্বভাবে
অন্ধকার যেন বিষাদের গর্ভগৃহ
অপদেবতাদের দখলে ।
আলোর অভাবে শরীর সেই কাদামাটি
তুমি চলে গেলে মৃত্যুর হাত ধরে ।
এদের নিজস্ব কোনও রং নেই
এভাবে উড়তে দেখলেই বুকের শিহরণ
আকাশ ছোঁয়, দিকে দিকে তেরঙা পতাকা ,
ভোরের ঘুম ভাঙিয়ে বীজপুরুষ কোমরে গামছা
কাঁধের লাঙলে টুং টাং আহির-ভৈরব ।
পুটলিতে রাখা পান্তাভাত আর কলমিশাক ভাজা
নামিয়ে রেখে, সূর্যের দিকে দুহাত জড়ো করে হৃদয়ে রাখে।
পটুয়া পাড়ার আটচালা থেকে ছিয়াত্তরের চৌকাঠে পা ,
আগস্ট মাসের পরিচ্ছন্ন আকাশ দেখছেন মৃৎশিল্পী
সারা গায়ে গেরুয়া সাদা সবুজ মাখামাখি ।
খেলা ফেলে শিশুর দল ছুটে যায় ঊর্ধ্বশ্বাসে
পায়ে জল ছপাছপ, চকচকে চোখের মনি
এসে দাঁড়ায় স্কুল মাঠে' টানটান শিরদাঁড়া
আশ্চর্যজনক ঘূর্ণাবর্তের মধ্যে এরা নক্ষত্র অনুসন্ধানী
তাই এদের নিজস্ব কোনও রং নেই
বাম হাতের শক্ত মুঠি ছুঁয়েছে হাঁটু
ডান হাতের চেটো কপালে ঠেকিয়ে চোখ ছলছল !

**************************************************************************************************
জন্মস্থান: অখণ্ড মেদিনীপুর জেলার তামলদা গ্রামে। শিক্ষা : ইতিহাসে স্নাতক বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি।প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ছয়টি। নৈঃশব্দ্যের বতিঘর । অনন্তের স্পর্শধ্বনি । মগ্ন জলের অন্তরা । বেদুইন মেঘের ইশারা। শূন্য প্রহরের স্বরগ্রামে। আদিম স্রোতের সংলাপ। প্রবন্ধ গ্রন্থ প্রকাশের পথে। পুরষ্কার ও সম্মাননা : অনন্তের স্পর্শধ্বনি কাব্যগ্রন্থের জন্য " নবপ্রভাত " রজতজয়ন্তী সম্মাননা ও পুরস্কার ২০১৭ " মগ্ন জলের অন্তরা " লাভ করেছে " ডলি মিদ্যা স্মৃতি পুরস্কার "২০১৯ । দুই বাংলার অক্ষরকর্মী পদক । "যদি জানতে" সম্মাননা গ্রহণ ২০২১ সালে । "পাইওনিয়ার শ্রুতি সন্ধ্যা'র" পক্ষ থেকে জেলার শ্রেষ্ঠ কবি সম্মাননা ও পুরস্কার লাভ ২০২২ ।"শব্দরেণু " সম্মাননা --- ২০২৩ ইত্যাদি




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন