শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নবনীতা



নবনীতা * দু’টি কবিতা







"মোরা সঁইয়া মোসে বোলে না" 

বিকেল থেকে সন্ধে নামার মুখে

বাঁশবাগানে মাথার ওপর চাঁদটি যখন উঠব উঠব করে,

আমার কেমন যেন নেশাগ্রস্তের মতো ঝিমধরা লাগে।

যেন বিষহরির মন্ত্রের জাদুময়তা

ছড়িয়ে পড়তে চায় চরাচরময় সমস্ত প্রহর জুড়ে।

জানি, গুলজারের লেখা জগজিৎ সিংয়ের গজল

তোমার পছন্দ নয়, 

তবু এসব অনুভূতির কথা তোমায় জানাতে গেলে

আমার তো সেসব গজল ভিন্ন আর কোনো উপায়ও থাকে না।

অনবরত যেসব কথা তোমায় বলতে চেয়ে

পোষা বেড়ালের মতন পায়ে পায়ে ঘুরি,

সেসব কথার না-বলা বাণী

ঝরা ফুলের পাপড়ি হয়ে উড়ে যায় বিবাগী বাতাসে।

ফুলের গন্ধে সন্ধের যুবতী শরীর ভারি হয়ে আসে।

জ্যোৎস্না আরো একটু ঘন হয়ে এলে

মাধবীলতার ঝিমঝিমে গন্ধ মাখতে মাখতে

আমি গুণগুণিয়ে উঠি আনমনে

"মোরা সঁইয়া মোসে বোলে না"...।



গ্লানি 

হারমোনিয়ামের রীডে কোমল নিষাদ আলতো স্পর্শ করে

যতবার গাইতে চেষ্টা করি, "জগতের আনন্দ যজ্ঞে

আমার নিমন্ত্রণ", ততবারই আনন্দ উচ্চারণ করতে গিয়ে

গলার কাছে কী যেন দলা পাকিয়ে ওঠে অনিবার্যভাবে।

আনন্দ যজ্ঞে আমার নিমন্ত্রণ জোটেনি কখনোই

দৈব-নির্ধারিত অদৃশ্য ও অলঙ্ঘ্য বিধান মেনে

বরাবরই রয়ে গিয়েছি সংরক্ষিত তালিকাভুক্ত।

কোনো প্রত্যাখ্যানই আজকাল আর বিচলিত করে না।

প্রত্যাখ্যানের চেয়েও বড় বেশি গ্লানিকর মনে হয়

মিথ্যা আশ্বাসের অথৈ সমুদ্রে লগি ঠেলে ঠেলে

অর্থহীন ও গন্তব্যহীনভাবে বিরামহীন নৌকা বেয়ে চলা।



****************************************************************

                       



নবনীতা 
                                                   

ব্যক্তিগত পছন্দে গৃহবধূ ৷ স্বনিযুক্ত পেশা হিসেবে শিক্ষকতার সাথে যুক্ত৷ শিকড় ও ডালপালা উত্তর চব্বিশ পরগণার মফস্বল অঞ্চলে৷ অনুবাদ করতে ও লিখতে ভালো লাগে৷ লেখার মাধ্যমে নিজেকে ভিন্নতরভাবে খুঁজে পেতে ভালো লাগে৷ অনুবাদ ও  মৌলিক লেখা প্রকাশ "যুগ সাগ্নিক পত্রিকা", "নতুন মান্দাস পত্রিকা", "সাঁকো পত্রিকা", "গানপুকুর পত্রিকা", "ছায়াবৃত্ত পত্রিকা", "শাব্দিক পত্রিকা", "উত্তরপক্ষ কবিতা পত্রিকা"র মতো বিভিন্ন প্রিন্টেড ও ডিজিটাল পত্রিকায়৷

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন