রহিত ঘোষাল * দু’টি কবিতা
পুতুলের বিয়ে
সমাজ আমাদের কোনদিন মেনে নেবে না শ্রীময়ী,
রান্না তেলের মধ্যে ঈর্ষা ভেসে থাকবে-
তুমি পৌষালীদের বাড়ি যাচ্ছ বলে
আমার কাছে আসবে,
আমিও আসবো পার্টির ছেলেদের
চোখ এড়িয়ে,
তোমাকে জানাই মাঝে মধ্যে বিকেলবেলা
আকাশ যে লাল হয় তা বিপ্লবীদের রক্ত,
যা প্রথমে বাষ্প হয়েছে তারপর আকাশের গায়ে
লেপ্টে গিয়েছে,
তোমাদের ভাড়াটে রোজ মদ
খেয়ে এসে বউকে মারে,
তোমার এক বান্ধবী প্রেমে ব্যর্থ হয়ে
গলায় দড়ি দিয়েছে, আরেকজন ছাদ থেকে
দিয়েছে ঝাঁপ,
শেষবার সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময়
তার হাতে ছিল টর্চ,
ফ্যানে শাড়ি বাঁধতে বাঁধতে স্মৃতিতে
উঠে এসেছে কাশফুল,
তুমি অবচেতনের গায়ে আগুন দিও,
প্রেমিক গাছের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল প্রেমিকা গাছ,
প্রেমিক গাছের শুধু ডালপালা কাটা পড়েছে,
প্রেমিকা গাছ ঝড়ে উপড়ে গিয়েছে,
আর যে নদী মন্দির নিয়ে গেছে ভাঙনে,
আর যে সাপ ছোবলটুকু রেখে গেছে
মাটি লাগা কলার ভেলায়,
ওখানে তুমি লালপাড় শাড়ি, যত্নে
মুছে দিও গ্যাঁজলা,জমাট বাঁধা রক্ত,
সেদিন তোমার পুতুলের বিয়ে
ভিন গাঁ থেকে আসবে পাত্রপক্ষ,
তোমাদের মস্ত লোহার গেটের সামনে
আমার গর্ত গর্ত শরীর মাথাভাঙা মৃতদেহ
নাটমহল
যে দু একটা ব্যথা একীভূত হয়েছে
তাদের ছাড়িয়ে নেব,
আবেগ সব পাঁচমিশালি হলে
মতদ্বৈততা অন্তরের প্রাচীর পার হতে দেয় না,
পাংশুবর্ণ গাত্রবেদনা টেনে হিঁচড়ে চলা এখন,
একদমে পৌঁছাতে চাই আলোকসজ্জার কাছে,
ঘুপচি অন্ধকার গলি
জানতে পেরেছে আমি বহিরাগত
তাই সে মনোভিলাষ এখনো বলেনি
মিঠেকড়া তামাকের কাছে,
বনকপোত আমাকে ডাকতে এসেছে
এখন কিছুদিন নিশ্চিদ্র গোপনতা-
শূন্য থাকবে নাটমহল
******************************************************************************
রহিত ঘোষাল
দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ এলাকায় ১৯৯০ এর ৯ অক্টোবর রহিত ঘোষালের জন্ম,সেখানেই শৈশব ও কৈশোর ব্যয় করেন।লেখালেখি করছেন ২০০৭ সাল থেকে। জীবনের বিচিত্র সব শিল্প সংস্কৃতি সংক্রান্ত কৌতূহল ও স্বপ্ন মেটাতে ও বাস্তবায়ন করতে প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা কলেজ অব্দি।বিভিন্ন রকম পেশা বদলে বর্তমানে একটি ব্যক্তি উদ্যোগের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।কবিতা লেখার আশেপাশে অভিনয় করেছেন মঞ্চনাটক ও অন্তরঙ্গ নাটকে।গান গেয়েছেন এবং লিখেছেন নানা বাংলা ব্যান্ডের দলে,অবসরের ছবি আঁকতে ভালোবাসেন আপন মনে।
প্রকাশিত বই :পীড়িত অববাহিকা





আমার গর্ত গর্ত শরীর মাথাভাঙা মৃতদেহ... দারুন চিত্র কল্পনা
উত্তরমুছুন