সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০২৩

গৌতম কুমার গুপ্ত





গৌতম কুমার গুপ্ত * তিনটি কবিতা








বয়স

সকাল জানে রাত্রির কালো

রাত্রিও জানে সকালের বাল্যকাল 


সকাল হয় বালকবেলা বাড়ে

সূর্য ক্রমশঃ যৌব পায় প্রবল সূর্যালোকে


রৌদ্রের ঘনত্বে টের পাই প্রৌঢ়ত্ব

তাম্রবর্ণের এক একটি দিন


ছায়ার কৃষ্ণবর্ণে আমাদের প্রবল অনুরাগ

হরিদ্রাভ দ্বিপ্রহরের ওজন বেড়ে গেলে

কেমন বাদামি বিকেল হয়ে যায়


তোমার চিকুরে তুমি যখন কৃত্রিম কাঁচা কিশোরী

আমারও পলিত কেশে তখন অনুর্বর ক্ষেত্রফল



জগন্নাথ কবি 

এক জগন্নাথ মন্দিরে গিয়ে দেখি

একটি অসমাপ্ত কবির মূর্তি

সম্পূূর্ণ করার আগেই পলাতক কারিগর

কবিও আজ ঠুঁটো জগন্নাথ


জনশ্রুতি শর্ত পূরণ হয় নি কারিগরের

কবির মূর্তি ভগ্নাংশ তাই


কবিতার কাগজটি কুড়িয়ে দেখি

সেখানে রয়েছে কবিতা লেখার শর্তাবলী

কেউ বলেছে তাঁকে

কাগজে লিখে কিছু লাভ নেই

পড়বে না কেউ

তার চেয়ে দেওয়ালে লেখো শ্লোগান

পড়ে নেবে টোটোচালক রামু থেকে মুন্নি আয়া


জনান্তিকে কবি চুপিচুপি বলেন 

আমি এক জগন্নাথ কবি

কলম থাকলেও ধরার কোন আঙুল নেই

আমার আজ থেকে কোন কবিতাও  নেই











রাগ

এখন দেখছি রেগে আছে সবাই

আমি তুমি সে ও সখা

এমন কি শিশুটিও দুধের বোতল ছুঁড়ে মারে 


সুর্যের তো বেলা বাড়লেই রাগ বাড়ে

ওদিকে কুকুরেরা পাড়ায় পাড়ায় ভেউ ভেউ করে


ছোট বড়ো মাঝারি ফুল হাফ 

সব নেতারা রেগে আছে

রেগে আছে যুবক যুবতি ছেলে ছোকরারা

বাবা মা কাকা পিসি মাসি আত্মীয়স্বজন সবাই

এমন কি আমিও রেগে আছি


চাঁদও রেগে ডুব দিয়েছে আকাশে

গাছেরা নির্বাক

বোঝা যায় না রাগ কিংবা বিরাগ


এসব রাগারাগির মাঝে একজনকেই রাগতে দেখলাম না 

সেটা মাটি

যার ওপরে দাঁড়িয়ে আমরা সমানে রাগ দেখাচ্ছি


*************************************************************************************************




গৌতম কুমার গুপ্ত

জন্ম  ১৩৬৭ বঙ্গাব্দে বাঁকুড়া জেলার শালতোড়া থানার গোপালনগর গ্রামে।বর্তমানে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের বাসিন্দা।প্রথম জীবনে সাংবাদিকতা পরে ই সি এলে কেন্দা এরিয়া বিভাগের কর্মী ছিলেন।২০১৯ সালে চাকুরিজীবন থেকে অবসর গ্রহন করেন।শিক্ষাগত যোগ্যতা বিজ্ঞান এবং কলা বিভাগে স্নাতক।পরে পার্সোনাল ম্য্যানেজমেন্ট ইনডাসট্রিয়াল রিলেশনে স্নাতকোত্তর পাশ করেন।আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে লেখালেখি শুরু।'কালকেতু' নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তো বটেই ওয়েব ম্যাগাজিনেও গল্প কবিতা প্রবন্ধ লিখে থাকেন।এ পর্যন্ত তাঁর চারটি কাব্যগ্রন্থ  " সময়ের এই জলসাঘরে,'স্বভাবের সিলেবাস','অক্ষর ভাইরাস' এবং 'বিষুবরেখার পাখি' প্রকাশিত হয়েছে।কয়েকটি নাটকও লিখেছেন। ইতিমধ্যে "কয়লাক্ষেত্র "এবং কৃষ্ণগহ্বর নামে দুটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে।।শীঘ্র একটি কাব্যগ্রন্থ 'যদি হৃদয়ের কথা বলো'প্রকাশিত হতে চলেছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন