মনোজ বাগ * দু'টি কবিতা
এক আঁচল প্রশান্তি
ছায়া ছায়া মূর্তিগুলির আনাগোনা দেখি
প্রতিটি মুহূর্ত ।
কে বা কারা অতিথির মতো কোন দিনক্ষণ , বার , তিথি , নক্ষত্র
কিছু না মেনেই এলো আবার চলেও গেল কিছু মায়া রেখে !
রোজকার এই নিয়ম মাফিক জীবনের অনেক ঊর্দ্ধে
ধ্রুব সত্যের মতো তবুও কেউ কেউ ফুটে আছেন
দূর নক্ষত্রের আলোয় ,
অন্ধকার খুব ঘন হলে তাঁদের দ্যূতি চোখে পড়ে ।
যদিও প্রকৃতি শেষ পর্যন্ত কাউকেই অমরত্ব দেন না ।
সে যেই হোক -- কথাটা জেনেও সাধ্বী স্বাতীর মতো
কারো কারো নামেইই তবুও আমরা নাম রাখি
কোন কোন নক্ষত্রের ।
সপ্তর্ষি মন্ডলের তারাদের ,
বশিষ্ঠ্য - মরীচি -পুলস্ত্য - পুলহ - অত্রি - অঙ্গিরা - ক্রতু --
এই সব ঋষি শ্রেষ্ঠদের নামে ডাকি ।
পায়ের তলার এক চিমটে মাটি আশ্রয় করেই
ভেসে আছি অপার শূন্যে ।
যে মাটি এক আঁচল প্রশান্তি --
যা নিছকই মায়া দিয়ে খুবই নিখুঁত ভাবে বোনা ।
ইমারত
গড়ে উঠছ তুমি
দেখতে দেখতে একদিন অনেক বড় হবে ।
কাল তোমার নাবাল জমিতে মাটি পড়া দেখেছি ।
আজ দেখছি ভিত গড়া ।
আগামী কাল দেখবো কলম ঢালাই ।
তারপর এক একদিন এক এক রকম দেওয়ালের গাঁথনি ।
জানলা দরজার ফ্রেম বসানো ... বারান্দার গ্রিল ,
সিঁড়ির কারুকাজ ।
ছাদের ওপর ছাদ উঠবে -
একদিন সারা সংসার দেখবে তোমার রূপ ।
ধাবার মাঠে রেল বসতির এক পাল ছেলেমেয়েকে দেখছি --
জল কাদা মেখে এই ভর দুপুরেও
হই হুল্লোড়ে মেতে আছে ।
ওদের স্কুল নেই --
টিউটরের ডেলি রুটিনে কোন হোম টাস্ক নেই ।
এক পেট খিদে নিয়েও পাঁই পাঁই দৌড়োয় -
একে অন্যকে ছোঁয় -- ছুটে এসে জাপটে ধরে
আর বিশ্বজয়ের উল্লাসে ফেটে পড়ে ।
হাওয়ারও চেয়েও হালকা ওদের শরীর ।
আজ খেলে বেড়াচ্ছে , কাল খেটে বেড়াবে -
এর ওর মাঠে , কল-এ , মিল-এ...
দেখতে দেখতে একদিন মরেও যাবে ।
গড়ে উঠছ তুমি -- তনিষ্ঠ তোমার মন ।
তোমাকে গড়ে তুলছে কত মানুষের শ্রম স্বপ্ন সাধনা ।
তোমাকে ঘিরে তাদের সবার সব মেহনত
একদিন সার্থক হবে ।
******************************************************
পেশায় ব্যবসাজীবী । কবিতা বেঁচে থাকার রসদ ; অনিবার্য এক ইন্ধনও । প্রিয় কবিতার গ্রন্থ : গীতা , ঈশোপনিষদ , গীতবিতান , আমিই মাটি , আমিই আকাশ (সুজিত সরকার) । কবিতা প্রিয় বিষয় হলেও সাহিত্যের প্রতিটি শাখাই টানে । সঙ্গীত ও চিত্রকলার প্রতিও প্রবল আকর্ষণ আছে । ভালো লাগে ভাবতে : আপাত যা কিছু -- এই সবই এক পরম সত্যেরই প্রকাশ ।




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন