মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩

বরুণ পাল




বরুণ পাল * দু'টি কবিতা 







ইচ্ছেপত্র

বসন্ত আকুল হয় বকুলবাগে

নিকানো উঠোনে নৃত্য সাধনা 

সব দ্বিধা ভাঙে সময়মতো

 ব্যস্ত নদী পায় শান্ত মোহনা


 মধুবনে বেড়ায় মনের হরিণী

পায়ে তার ফেরার আকুলতা

 সময় মুছেছে শান্ত ছায়ামুখ

 হাওয়ায় দোলে নিরুত্তর পাতা


 নিঃশব্দ কুঁড়ির  গভীরে 

 শত সুখ ডুবায় মুখ 

 দীপ্ত রোদে দুপুর মেপে

 অশ্বত্থছায়া আজও চুপ


শ্মশান শীতল হয় ছায়াবটে

বাউল ঘুমায় মাটির মায়ায়

মরা কুয়োয় নামে পড়ন্ত রোদ

ইচ্ছেপত্র হাওয়ায় ভেসে যায়


বিকেল হাঁটে গোধূলির পথে

পশ্চিমে লুকায় অস্ত রবি

বাতাসে ভাসে ভাসানগান 

পদ্মপাতায় জল ধরে কবি


শূন্য ধরে না আর আনমনা আকাশ 

ফেরারী পাখি ডানায় কুয়াশা মাখে

পর্ণমোচির শেষ পাতাটিও যায় ঝরে 

শিকড়ে নক্ষত্রের মানচিত্র এঁকে।











অন্য অভিমান 

হরিণ চোখে সাজানো বাগান

বলাকাডানা রোদ্দুর ধরে আনে

শিশিরকণায় ভোরের আয়োজন 

ফোটে ফুল নরম অভিমানে


সত্য সে তো মিথ্যায় ঋণী

মুখোশের কাছে যেমন মুখ

আমার কাছে তুমিও তেমন

আপন হওয়ার গোপন সুখ


যাপন প্রহর ভাঙে শব্দব্রহ্ম

সময় সরে যায় ফেরারী হয়ে

দেওয়া কথারাও নিয়ে যায় ছুটি 

কথা না রাখার অভিপ্রায়ে


না চাইতেই পেয়েছো যে সব

অতীত তো এখন অবাঞ্ছিত

জেনো লাঞ্ছনারও কলঙ্ক থাকে 

কলঙ্ককেও  হতে হয় লাঞ্ছিত


 মুক্তাই শুক্তির মৃত্যুর কারণ

 সুপ্ত সে সত্য জেনেছি আমি

 অবাক হয়ে উত্তর খুঁজি তাই

 পূজার চেয়ে ফুল কি দামি!


**********************************************************************************************



বরুণ পাল 

  উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ থানার বাঁকড়া গ্রামে কবি বরুণ পালের জন্ম ৬ই কার্তিক ১৩৭৯। ছাত্রাবস্থাতেই কবিতাপ্রেম। তিন দশক ধরে বাংলা ও বাংলার বাইরে পত্রপত্রিকায় তাঁর সৃষ্টির প্রসার। ' পৃথিবী গাভীন হবে','এক সাহারা বৃষ্টি ' ও 'শঙ্খবেলা ' কবির প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ।

দারিদ্র্য পেরিয়ে আসা জীবনের কথা মনে রেখেই বিভিন্ন সমাজসেবা ও বিজ্ঞান সংগঠনের সাথে তাঁর প্রত্যক্ষ সংযোগ।রবীন্দ্রসঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান সংস্কার মুক্ত শিক্ষক - কবির প্রাণের সম্পদ।"স্বরবর্ণ"এর  পথ চলায় রয়েছে তাঁর অকুণ্ঠ সমর্থন।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন