মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩

গল্প * ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না





ভুলভুলাইয়া

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না


অফিসে বেরবার সময় রোজ পাশের বাড়ির  বারান্দায় চোখ চলে যায় দেবমাল্যর। অন্তত পনেরটা বেড়াল তার আবার বেশ কয়েকটা বাচ্চা। তারা সারাক্ষণ হুটোপুটি করে খেলে বেড়ায়। আর একটা পুরনো ডেক চেয়ারে বসে অঞ্জলি মাসীমা বেড়াল গুলোর সাথে নরম সুরে কথা বলেন। এ পাড়াটায় বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেশি। তাদের সব কৃতি ছেলেমেয়েরা বিদেশে বিভুঁয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে "পোড়া দেশে" আর ফেরেনি। দেবমাল্য বন্ধু অসীমের ফাঁকা ফ্ল্যাটে চলে এসেছে মাস খানেক আগে। একতলায় সেচ্ছাসেবী সংস্থা 'চিরসখার' অফিস। এই সব একাকী বৃদ্ধ বৃদ্ধা দের বিপদের সাথী। কোনো কোনো বাড়িতে এদের ছেলেমেয়েরা রোজ পরিষেবা দেয়। এপাড়ারই  ছেলে প্রবুদ্ধ মন্ডল ছোট থেকে এই মানুষ গুলোকে ধীরে ধীরে বয়স্ক অশক্ত আর বিষন্ন হতে দেখতে দেখতে এই অবস্থাটার বদল চেয়েছিল। পাশের বাড়ির অঞ্জলি মাসীমা প্রবুদ্ধর মেন্টর বলা যায়। কী করে কাউকে না ঠকিয়ে একটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠান চলতে পারে সে ব্যাপারে 'চিরসখার' বিবেক বা নজরদারের কাজটা করেন। একা থাকেন। ছেলে বহুদিন কানাডায়। তাঁরই পঁয়তাল্লিশের বেশি বয়স। বছরে একবার দেশে ফেরেন। মাকে নিয়ে বেড়াতে যান দিন পনেরর জন্য।  প্রতিবেশিদের বাড়ি ঘুরে ঘুরে সক্কলের খোঁজ নেন। দোতলার ভাড়াটেদের সাথে সম্পর্ক সুন্দর রাখেন নানা উপহার দিয়ে।  প্রবুদ্ধ  আর তার দলবল ইউনিফর্ম আর জুতো পায় এন আর আই স্পনসরদের থেকে। প্রবুদ্ধকে নিয়মিত নানা ব্যাপারে পরামর্শ দেন অঞ্জলি মাসীমা আর তাঁর ছেলে। অসীমের কাছে সে এও শুনেছে চিরকালই রাস্তা থেকে আহত নিরাশ্রয়  কুকুর বেড়ালের বাচ্চাকে সেবাও করেন।

আজ বেরবার সময় দেবমাল্য দেখল 'চিরসখা' লেখা তুঁতে টিশার্ট আর  কালো প্যান্ট পরা মেয়েটি অঞ্জলি মাসীমার হাত ধরে নিয়ে আসছে আর 'আয় আয়' করে  অঞ্জলি মাসীমা  একটা পথকুকুরকে ডাকতে ডাকতে আসছেন। তার পেছনে অঞ্জলি মাসীমার কাজের লোক অল ইন ওয়ান মাঝ বয়সী মহিলা। তার হাতে বাজারের ব্যাগ।  মাসীমা পাড়ায় এই সময় যতটা পারেন  খোঁজ করেন সবার। দেবমাল্যর মনে হয়  সে একটা নিরাপদ জোনে বাস করছে। অসীমের কাছে শুনতে শুনতে  সে এখানে থাকার আগ্রহ দেখায়। এখন দেখছে ভুল করেনি। খুব ইচ্ছে করে তার মাসীমার সাথে আলাপ করতে। ভাবছে এই রবিবার সকালে সেও হাঁটতে বেরবে আর আলাপটা সেরে নেবে।

আজও সকালে বেরবার সময় সে দেখল গ্রীলের এপারে সিঁড়িতে কুকুরটা শুয়ে আছে একটু ক্লান্ত ভাবই। সামনের ডান দিকের পায়ে ব্যান্ডেজ। বেড়ালগুলো বারান্দায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রথম শীতের রোদ পোয়াচ্ছে। একতলায় 'চিরসখার'

অফিসে নাইট ডিউটির ছেলে দুটোকে দেখল চা খাচ্ছে। বিদেশে সে শুনেছে ইউনিভার্সিটির ছেলেমেয়েরা এসব কাজ করে। এখানে এত ছেলেমেয়ে বেকার যে তারা এসব কাজ করতে চায়কিন্তু তাদের এভাবে কাজে লাগানোর কথা খুব একটা ভাবা হয়না। তবে শহরাঞ্চলে এই পরিষেবাটা পাওয়া যায় আজকাল। দেবমাল্য এটা খেয়াল করেছে তার অ্যাঙসাইটি ডিসঅর্ডার এখন অনেক কম ভোগাচ্ছে। কোনো বিপদের মুখেই মানে সে যেসব বিষয়গুলোকে মনে করে বিপদের সেগুলোর  সামনে  পড়লে  পায়ের তলার মাটি কাঁপছে না অথবা মাথার মধ্যে বিভৎস অট্টহাসির মতো আওয়াজ শুনছে  না। হয়তো পাড়াটা নিরাপদ বলে। হয়তো এখানে একটা পসিটিভ ভাইব কাজ করে বলে।

  'চিরসখা' র কাজের সাথে যুক্ত হতে ইচ্ছে করছে তার। অসীম তো গ্রিস থেকে প্রায়ই ফোন করে। চিরসখা থেকে একটি অল্পবয়সী ছেলে এসে রাতে থাকেও মাঝে মাঝে।

#

মা বাবার একসাথে চলে যাওয়াটা তাকে মানসিক ভাবে শেষ করে ফেলেছিল। এত বছরেও সেই ক্ষত ভেতরে ভেতরে রয়েই গেল।কেন যে তারা ভোর বেলা কাউকে কিছু না বলে একটা ছয় বছরের বাচ্চাকে রেখে  বাড়ি থেকে চলে গেল আর কোথায় গেল এত বছরেও কেউ জানল না। মামা খবর পেয়ে নিয়ে গেছিল তাদের বাড়ি। তার পরের সেই বড় একটা শূন্যতা সাঁতরে এতদূর এসেছে দেবমাল্য। ওর মা  বাবা নাকি ফ্রড। মানুষের থেকে প্রচুর টাকা তুলত চড়া সুদ পাইয়ে দেবার নাম করে। ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করে এসব কাজ হত। কারো কাছে খবর ছিল না। তার ব্যাঙ্কার মামাও জানতে পারেনি। রাতারাতি সব বদলে গেছিল। দিদা দাদু মামা প্রত্যেকে নিজের মতো করে তাকে জেরা করত। একটা অতটুকু  বাচ্চা কোনো কিছুই ঠিক করে বলতে পারত না। সকলের ব্যবহারের মধ্যে আর সহানুভূতি ও ভালবাসার গায়ে মিউকাসের মতো লেগে থাকতো ঘৃণা। মনে হতো তার চারপাশের মানুষগুলোই কি রূপকথার রাক্ষস?  কখন যে তার কথা আটকে যেতে লাগল আর লোক দেখলেই সিঁটিয়ে যেতে আরম্ভ করল কেউ খেয়াল করল না। সব কিছুতে ভয় পেতে শুরু করল। অচেনা লোকজন, স্কুলের ক্লাসরুম, পাড়ার মোড়ের জটলা সব কিছুতে ভয়। মাটি ফুঁড়ে উঠতো নানা রকম বিকট দেখতে প্রাণী। আতঙ্কে তার চোখ বুজে যেত। শ্বাস কষ্ট শুরু হত। দিদার কাছে শুয়ে কিছুটা ভাল লাগত কিন্তু কখন যে বিছানা ভিজে যেত।সকালে উঠে দিদা খানিক গজ গজ করত সব রোদে দিতে দিতে। কাচা বেশি পড়ছে বলে কাজের লোক নালিশ করত। কাজের লোকটা সব থেকে পাজি ছিল কেবল বিছানা ভেজানো নিয়ে হাসাহাসি করত নয়তো কট কট করে কথা শোনাত।   তারপর যেদিন দাদুর কাছে পড়তে পড়তে ধমক খেয়ে  বমি করতে লাগল দেবমাল্য সেদিন মামা একজন  ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল। সেখান থেকে আসার পর আবার একজন বড় ডাক্তার। তিনি অসুখটার নাম বললেন। মামা তার আদরের দেবামকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল। নিজে বসে তবলা শেখাতে লাগল। আঁকার স্কুলে ভর্তি করে দিল।  পড়াশোনায় চাপ না দিতে বলল দাদুকে।

নানা রকম পছন্দ অপছন্দের টানাপোড়েনে চলতে চলতে  মামার বিয়ে পিছিয়ে যেতে লাগল। দাদু বা দিদা কেউ না কেউ অসুস্থ হতে লাগল।   একদিন মামা একেবারেই অনাড়ম্বরে  রেজিস্ট্রি করে মামীকে নিয়ে এল। তাকে খুব মনোযোগ ও স্নেহের সাথে   সাহায্য করতে লাগল মামী। প্রিয়জনের সান্নিধ্য ও চিকিৎসায় অনেকটা আত্মবিশ্বাস পেল দেবাম। কখন যে তার নাকের নিচে হাল্কা নীল দাগ আর গলার স্বর ভাঙতে লাগল তা সে নিজেই বুঝতে পারল না। বড় হতে লাগল সে, বোর্ডের পরীক্ষায় ভাল ফলও হল। মামা ঘরে ডেকে একদিন বলল " তুই তো এখন বেশ বড় হয়েছিস দেবাম, এবার তো সবাইকে দেখে রাখার পালা। তোর কিছু টাকা আমার কাছে গচ্ছিত  আছে। এবার সে টা তোর নামেই ব্যাঙ্কে থাকবে। তোর যা খরচ সেতো আমিই করি। মামীও ভালই রোজগার করে। বহুদিন পর আবার তার মাথায় একটা কষ্ট হতে লাগল। মামা এসব কথা কেন বলছে? আমায় কী করতে হবে? মামা বলল, "আমার পোস্টিং হেড কোয়ার্টারে হয়েছে।তিনটে বছর তোকে দাদু দিদা মামী আর ছোট বোনকে দেখে শুনে রাখতে হবে।  তুই পারবি আমি জানি,তিন বার বল, পারবি পারবি পারবি।" দেবামও এই "পারব পারব পারব" মন্ত্র জপে জপে  মাথা ঘোরা ঘাম আর বমি বমি ভাব সহ্য করে চুপ করে রইল।  পাঁচ লক্ষ টাকা সুদে এত বছর অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু এ দিয়ে কী করবে সে? যারা তাকে বাতিল জিনিসের মতো ভাড়া বাড়িতে ফেলে রেখে চলে গেছিল তারা টাকা দিয়ে কর্তব্য করেছে!  তাও লোক ঠকানোর টাকা!  এ টাকা বাজেয়াপ্ত হল না কেন? রাগে দু:খে দেবাম থর থর করে কাঁপতে লাগল। মামী বলল, "মনখারাপ করিসনা দেবাম,  পৃথিবীটা অনেক বড়, অনেক কাজ করতে হবে তো? তুই না হয় বড় হয়ে দান করবি কোনো সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে।" মামীকে তার  পালিয়ে যাওয়া মার বদলে পাওয়া "ভাল মা " মনে হল। কাউন্সিলিং সেশন আবার চালু হল


বাড়িতে আলোচনা হয়  কী করবে সে, কী হবে? আর্ট কলেজে নাকি গান বাজনায় নাকি মেইন স্ট্রিমে? সে কিন্তু কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়তে চাইল। স্কুলে কোমা তার বেশ লাগে। স্থির হল ঠিক ঠাক রেজাল্ট হলে তাই হবে।

হঠাৎ এক সকালে দাদু আর ঘুম থেকে উঠল না। পাশে থেকেও দিদা কিচ্ছু বুঝতেে পারেনি। দেবামের সেদিন কলেজে বেরবার আগে দাদুকে বলতে গিয়ে কেমন একটা উদ্বেগ হল। দাদুর মুখটা খানিকটা হাঁ হয়ে আছে। কপালের কোঁচগুলো সমান হয়ে গেছে।চামড়ার রঙটা... সে দাদুকে ডাকতে পারছেনা। জোরে মামীকে ডাকার চেষ্টা করল, পারল না কিন্তু মামীতো অফিসে।   সে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে দেখে বোনের আয়া মাসী কী যেন বলল। বোনকে স্কুলে দিয়ে সে ফিরছিল? সে এখানে এল কী  করে? মনে হল একটা খুব বড় পাখি বিশীল ডানা ছড়িয়ে এগিয়ে আসছে দেবামকে ছোঁ মেরে তুলে নেবে বলে, কানের মধ্যে বুম বুম আওয়াজ হচ্ছে। কে যেন খুব জোরে কেঁদে উঠল "হ্যাঁ রে লোকটা চলে গেল!" আয়া মাসী তার হাতটা ধরে জোরে ঝাঁকাচ্ছে। সে যেন কতদূর থেকে ফিরল। এক নাগারে কেউ বলে যাচ্ছে, " মামীকে ফোন কর"। সে তখন কাঁপা হাতে  তাই করল  কিন্তু কিছু বলতে পারল না। কথাগুলো দুমড়ে মুচড়ে  যাচ্ছিল। তার  হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে...  লীলা মনে পড়েছে আয়ামাসীর নাম, মনে পড়েছে দাদুুর কিছু হয়েছে, মনে পড়েছে মামা বলে গেছে সে পারবে, মনে পড়েছে জয়া ম্যাম সবার  টিটকিরি আর টিপ্পুনিকে অগ্রাহ্য করতে বলেছেন। সে এবার মামীর সাথে কথা বলবে বলে ফোনটা আবার নিল। ওপার থেকে শোনা গেল, "ড: মজুমদারকে ফোন কর আমি আসছি"। তারপর শুধু  কাজ আর কাজ একটা ঘোরের মধ্যে সব করে  যেতে যেতে অসুস্থ হয়ে পড়ল। ঠিকও হয়ে গেল। মামা এল আবার চলেও গেল কাজ কর্ম মিটিয়ে।

মামী আর বোনও কয়েকমাস পর চলে গেল মামার কাছে। সে দিদা আর লীলামাসী রয়ে গেল এই পুরনো আহিরিটোলার চুনবালি খসা বাড়িটায়।  পলিটিকক্সের লোকজন প্রোমোটারদের পাঠাতে লাগল। দেবামের শরীর আবার খারাপ হতে লাগল। ডাক্তারের কাছে যাওয়া শুরু হল। বি সি এ টা কোনো মতে উতরে গেল। কিছুদিন পর ক্যাম্পাসিং এ সেক্টর ফাইভে চাকরি পেল দেবাম। অসীমের মতো পরপোকারি বন্ধু পাওয়া গেল। ওরই পরামর্শে এম সি এ টাও একই সাথে করতে লাগল। এখন কে বলবে  সেই ছোট্ট, অসহায় দেবাম সে। একা একাই নিজেকে সামলায়। ডাক্তারের  পরামর্শ মতো চলে।

আজ রবিবার অঞ্জলি মাসীমার কাছে গিয়ে আলাপ করে নেবেই সে। "চিরসখা" তেও যাবার  ইচ্ছে। কিন্তু কতগুলো অচেনা মানুষ তাকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে দেখবে ভাবলেই গুটিয়ে যাচ্ছে সে। মাঝে মাঝে অজানা ভয় ভুস করে ওঠে এখনো।  খারাপ স্মৃতিগুলো ছাড়ছে না। রাত হলে কোভিডে দিদার আকস্মিক মৃত্যুর কথা মনে পড়ছে, মনে পড়ছে ফোনে মামার কান্না। লকডাউন। কলকাতা ছেড়ে চলে গেছে বলে আফশোস করা। মামাীর প্রশ্নের পর প্রশ্ন। লীলামাসী তার সাথে এখানে চলে আসতে চেয়েছিল। মামা প্রমোটারকে বাড়ি আর জমি বেচে দিল। দুটো ফ্ল্যাট তারা পাবে। বড়টা মামার আর ছোটটা দেবামের।  কাল রাতে কেমন যেন ঝিম ঝিম করছিল শরীর। লম্বা শ্বাস টেনে ছাদে বেরিয়ে এসেছিল সে। আসলে তো বেরতে চাইছিল ঐ সব মনখারাপ করা স্মৃতিগুলো থেকে। ছাদে রাখা নেয়ারের খাটে  কখন  ঘুমিয়েও পড়েছিল এক সময়। ঘুম ভাঙার পর মনে হল আজ সে "চিরসখা" তে গিয়ে তার প্রবলেমটা বলে আসবে তারপর মাসীমার সাথে আলাপ করবে। লীলা মাসীকেও নিয়ে আসবে। একা ভাল লাগছে না।

প্রবুদ্ধর সাথে কথা বলে খুব আশ্বস্ত হল সে। অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী ছেলেটা।। মনটা হাল্কা লাগছে। পাশের বাড়ির বারান্দার সামনে এসে হঠাৎ দাঁড়িয়ে গেল দেবমাল্য। মাসীমার উলের গোলাটা গড়িয়ে রাস্তায় চলে এসেছে। ডেক চেয়ারটায় মাসীমা বসে আছেন, ঘাড়টা একটু কাত হয়ে আছে চোখ বোজা। কোলে রাখা উলেবোনা অংশটার ওপর ব্রাউন বেড়াল ছানাটা ঘুমোচ্ছে। দুটো বড় বেড়াল মাসীমার দিকে মুখ উঁচু করে তাকিয়ে আছে। সিঁড়িতে কুকুরটা কুঁই কুঁই করে বার বার গ্রিলের ফাঁকে মুখটা ঢুকিয়ে দিচ্ছে। দেবমাল্যর ভেতরে দমকলের ঘন্টার আওয়াজ হতে লাগল যেন। পা বাড়াতে গিয়ে একটা পাও এগোতে পারলা না। কুলকুল করে ঘামছে সে। সে বুঝতে পারছে তার চোখ বড় হচ্ছে, কানের ভেতর বুম বুম শব্দ। না পারছে না। কিচ্ছু পারছে না সে এমনকি 'চিরসখার' দিকে মুখ করে  প্রবুদ্ধকে ডাকতে পারছে না। সে কি মাটির ভেতর ঢুকে যাচ্ছে! অঞ্জলি মাসীমা কি...? আহিরিটোলার সান্যাল বাড়ির দিদা বলছেন," অ্যাই তুই নাকি বিজনায় পেচ্ছাব করিস?" "তোর মা বাপের খোঁজ পেলি? ওরা নাকি জোচ্চোর?"  "কী ঢ্যাঁটা রে বাবা!" "কেমন ডাঁড়িয়ে আচে দেকো!"


*********************************************************************************************




ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন