মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৩

নজর উল ইসলাম




নজর উল ইসলাম * দু'টি কবিতা 








চিত্রণ ও চাঁদের উঠোন

দু'পাশে নৌকো রেখে মনবাস খোঁজা এমন শরীর

আমি ঠায় দাঁড়াব,বিষন্ন বিকেলের ঢেউ'য়ের গতিবিধি

সাজানো মনবেশ আর কুয়াশার নিরুত্তর আরোগ্যে

পার হচ্ছি দিনকে দিন সব যেন মরা খাত আড়ভাঙা

অবসন্ন জীবন তার শ্যাওলা টেনে যাচ্ছে অকথ্য রঙে 

ডানাছাঁটা পাখির আকাশ মুছে দিতে কত না শিড়দাঁড়া

কত বা আশ্রমিক সুলগ্নে মানুষ ডিঙিয়ে থিতিয়ে যাচ্ছি

পৃথিবীর বয়স হচ্ছে দেখেও শ্রেণীশত্রু এককাট্টা

শুধু চুষে চিত্তাকর্ষক মধু খেয়ে উড়ে যায় তেপান্তর 

রাত আসে নীরব এঁকে যায় সত্যিকারের চিত্রণ 

পায়ে পায়ে লুকোনো থাকে নিহিত নিপুণ কায়দা 

মহান সময় একা আসকারায় স্বাক্ষরিত 

দ্বিধাদ্বন্দ্বের ধন্দে পড়ে সামাজিকতা হারায় 

পাখিরা নমনীয় মেনে নেয় সমস্ত সিলমোহর

ছবি হয় ,পাঁজর ভাঙে স্বচ্ছ চাঁদের উঠোনে...











পঠন

অপূর্ণতার ভেতর জিজ্ঞাসার পরম পরিচয় 

যেভাবে পেয়েছি একমনে পাঠ করে যাচ্ছি 

মহান আঁধারে ঐতিহ্যর মধুবন সাধনায় পালিত 

কুড়িয়ে রাখি উপলব্ধির বাগানে মনম নির্দেশনায় 

সৃষ্টির খেলা খেয়াল রসে ডানা বাঁধে 

বেদনাবোধ চির চরিতার্থ শিল্পের ঘর 

অপরিসীম সুধায় সাজিয়ে আকাশ-ফুল 

মেঘ-মোহ কী মহা সমারোহে প্রেম জমায় 

দিগন্ত কাছে আসে বৈরাগ বিনয় ঝোরায়

খুঁজি এ বিপনন,কারা এসে,এত আঁকন শেখায় 

যেন সমগ্র পৃথিবীর মলাট সংষ্করণ 

আকাঙ্ক্ষার খাতা অতৃপ্তি পটের মনপাখি 

অনুশীলন চলে আয়নায় দেখি নিবিড় চর্চা 

শিরোনামহীন অনন্ত পদ্য-পদাবলী অনন্য

মনের সব ভাঁজ খুলে আরোগ্য চাওয়া প্রকৃতি 

শিল্পের শহরের বাসিন্দা হারানো ভিখারি—

অনুবাদ সব আমরা যা লিখি পৃথিবী–নিষ্ঠ 

বাঁধানোর কিচ্ছু নেই জীবনটা ঠিকঠাক পড়ার...



**************************************************************************************************



নজর উল ইসলাম

কবিতা এবং কবিতাকেই আঁকড়ে বাঁচতে চেয়েছেন নয়ের দশকের কবি নজর উল ইসলাম।১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর বসিরহাটের পশ্চিম বিবিপুর গ্রামে জন্ম। হাদরিদ্র পরিবারে প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছেন নজর উল কবিতার হাত ধরেই।

দারিদ্র্যের কারণেই উচ্চ মাধ্যমিকের পর উচ্চশিক্ষার কৌলিন্য অর্জন না-করলেও নজর উল ইসলাম নিরন্তর কবিতাচর্চার কবি হিসেবে সমুজ্জ্বল দু-বাংলায়। তাঁর ক্রমান্বয়ে প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলি হল ‘নদী এলেই তুমি এসে যাও’, ‘রাতপাখির দেহলি’, ‘আমিই সেই পথ’, ‘ ও বৃষ্টির মেঘ’, ‘মুখ লুকনো হৃদযমুনা’, ‘ মেঘপাখির আগুনলিপি’ প্রভৃতি। বাংলা সাহিত্যের প্রাতিষ্ঠানিক ও অসংখ্য লিটল ম্যাগাজিনে প্রবহমান তাঁর সৃজনশীল কাব্যকৃতির জন্য নজর উল ইসলাম পেয়েছেন চন্দ্রকেতুগড়, রিয়া ইন্ডিয়া এবং এখন বঙ্গদেশ সন্মাননা। 





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন