পঙ্কজ মান্না * দু'টি কবিতা
ওই তো শ্রীময়ী দেবী
বাইরে রাতের বিভা ,তার কিছু বেসামাল আলো
এসে পড়ে লেখার টেবিলে ...
যেমন সবারই থাকে--
টেবিলে পুরানো স্মৃতি,বিগত জন্মের প্রেম ,
পরিণয়,চোখে চোখে কিশোরীর কথোপকথন
কেন যেন মনে হয়,সময়ের ধুলো আর প্রবীণ
কুয়াশা জমে বৈদিক প্রহরগুলো আমারই
চেতন-ভূমে অচিন স্ফটিক
অবুঝ আকাশতলে বর্ষায় রাত ভেজে
মেঘের কুয়াশা-ঢাকা সাঁঝতারা ভিজে হলো সারা ;
এ-সময় জীবনের পান্ডুলিপি পুরাতন জামা খুলে
মাঝে মাঝে সামনে দাঁড়ায় ...
ওই তো শ্রীময়ী দেবী ,সর্বজয়া ,যেন পালতোলা
ডিঙ্গি নৌকো,কদমতলির মেয়ে আমার জননী ;
ওই তো দশম শ্রেণীর ঢেউ সাঁতরেই পার হলো
মনখারাপের পথ,তমাল নদীর ঘাট,ঘাতক হোঁচট
ওই তো শ্যামল -তনু দীর্ঘকায় বৈষ্ণব তমাল,
তাঁর বাউল-বাউল চোখে অনন্তে যাবার পথ;
ইনি বীতকাম আমার জনক ,হারানো স্বপ্নের
খোঁজে ছেনি আর বাটালিতে সারারাত ঈশ্বরের
হৃদয় গড়েন
মনে হয়,
আদি পৃথিবীর বনে আমি সেই একলা মানুষ
যাঁর করতলে ইতিহাস,অনুপমা কালচিত্র ভাসে...
বিনয়ী আলোর মতো টেবিলে পুরনো স্মৃতি ,
প্রবাসী স্মৃতির সুর সারা সন্ধ্যা ঘরের বাতাসে
নামে কী কাজ
কী নাম যেন ! কার কথা কয় নদী! গুলঞ্চঘাট এমন-ই থাকে ফাঁকা
সন্ধেবেলা মুক্তোঝরা আলোয় হঠাৎ করেই তাঁহার সঙ্গে দেখা
আমরা যেন পৌষ-ফাগুনের মেলায় কিনেছিলাম আকাশছোঁয়া লাটাই
উড়ছি আমি এবং শতেক ঘুড়ি, মনে হচ্ছে পক্ষী আমার মাথা-ই
অনাথ স্যারের চক ডাস্টার ওড়ে, হাত-পা ছুঁড়ি কর্ণবধের ভয়ে
কি নাম জলের!কি নাম যেন নদীর! অবাক তাকাই চোখ-জোড়া সংশয়ে
স্তব্ধ রাতে নামে তোমার কী কাজ! গুলঞ্চঘাট এমন-ই থাকে ফাঁকা
মুক্তোধারা চাঁদ ক্ষয়ে যায় পুড়ে ,সেই লগ্নেই তাঁহার সঙ্গে দেখা
অংক সরল এবং বড্ড জটিল ,উত্তর তো ন হন্যতে জিরো...
কৃষ্ণ জানে তাঁহার যেন কী নাম, অধিক জানেন অতল সত্যপীরও
****************************************************************************************************




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন